বুধবার, ০২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৪:২৪:৩৬

সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরের দেয়ালে ছবি আঁকা কি জায়েয?

সৌন্দর্য বাড়াতে ঘরের দেয়ালে ছবি আঁকা কি জায়েয?

ইসলাম ডেস্ক: ঘরের ভেতর নান্দনিক শোভা বাড়াতে অনেকেই সৃজনশীল কর্ম, পশু-পাখি কিংবা মানুষের ছবি দিয়ে দেয়াল অঙ্কন করিয়ে থাকেন। বেডরুমে মাথার ওপরে কেউ কেউ টাঙিয়ে রাখেন প্রিয় মানুষদের ছবি। নানা পশু পাখির মূর্তিও শোভা পায় অনেকের সাঝঘরে। কিন্তু ইসলাম এ বিষয়টি কোন দৃষ্টিতে দেখছে ভেবেছেন কি? একবার আয়েশা রা. একটি ছোট বালিশ ক্রয় করেছিলেন। তাতে ছবি আঁকা ছিল। ঘরে প্রবেশের সময় এতে রাসূল সা. এর দৃষ্টি পড়লে তিনি আর ঘরে প্রবেশ করলেন না। আয়েশা রা. তার মুখ ম-ল দেখেই তা বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন, আমি আল্লাহ ও তার রাসূলের নিকট তওবা করছি। আমি কি গুনাহ করেছি? রাসূল সা. জিজ্ঞেস করলেন: এই ছোট বালিশটি কোথায় পেলে? তিনি বললেন: আমি এটা এ জন্য ক্রয় করেছি যাতে আপনি এতে হেলান দিয়ে বিশ্রাম করতে পারেন। তখন রাসূল সা. বললেন, যারা এই সমস্ত ছবি অঙ্কন করেছে কিয়ামতের মাঠে তাদের আযাব দেওয়া হবে। তাদের বলা হবে, তোমরা যাদের সৃষ্টি করেছিলে. তাদের জীবিত কর। অতঃপর তিনি বললেন, যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। (বুখারী ও মুসলিম) তিনি আরো বলেছেন, কিয়ামতের মাঠে ঐ সমস্ত লোকেরা (যারা ছবি আঁকে তারা আল্লাহর সৃষ্টির মতই কিছু করতে উদ্যত হয়) সবচেয়ে বেশি আযাব ভোগ করবে যারা আল্লাহর সৃষ্টির মত সৃষ্টি করে। (বুখারী ও মুসলিম ) যেসব ছবি বা মূর্তি জায়েয গাছপালা, চন্দ্র, তারকা, পাহাড় পর্বত, পাথর, সাগর, নদ-নদী, সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য, পবিত্র স্থানের ছবি যেমন কাবাঘর মদীনা শরীফ, বাইতুল মোকাদ্দাস, বা অন্যান্য মসজিদের ছবি। এ ব্যাপারে ইবনে আব্বাস রা. বলেন, যদি তোমাকে ছবি বা মূর্তি বানাতেই হয়, তবে কোন বৃক্ষ বা এমন জিনিসের ছবি আঁক যাদের জীবন নেই। পরিচয় পত্র, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা এ জাতীয় কাজে ছবি উঠানো (অতিশয় প্রয়োজনের খাতিরে) জায়েয। হত্যাকারী বা অপরাধীদের ছবি তোলা জায়েয, যাতে করে তাদের ধরে শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়। এ রকম যদি ছোট মেয়েরা ঘরে বানানো কাপড় দিয়ে পুতুল খেলে তা জায়েয, তবে পোশাক পরিহিত ও পাক পরিস্কার হতে হবে, এর দ্বারা কিভাবে শিশুকে পালন করতে হয় তা বাচ্চারা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। ফলে, বড় হয়ে মা হলে তা তাদের উপকারে আসবে। আয়েশা রা. বলেন, আমি রাসূলের (সা) এর নিকট আমার পুতুল মেয়ে নিয়ে খেলা করতাম। (বুখারী) ছবির মাথা যদি কেটে দেয়া হয়. তবে তা ব্যবহার করার অনুমতি আছে। কারণ, ছবির মূল হল মাথা। মাথা যদি ছেদ করে দেয়া হয় তবে আর রুহ থাকল না। তখন তা জড় পদার্থের পর্যায়ে পড়ে। আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তার চেয়ে অধিক সীমালংঘনকারী আর কে যে আমার সৃষ্টির অনুরূপ কিছু সৃষ্টি করতে যায়? অতএব তারা একটিমাত্র শস্যদানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি মাত্র যব সৃষ্টি করুক তো। ” ইবনে উমর রা. থেকে তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন, নিশ্চয় যারা এই ছবি বা (মূর্তিসমূহ ) নির্মাণ করে তাদের কিয়ামতের দিন আযাব দেওয়া হবে; বলা হবে; তোমরা যা সৃষ্টি করেছ তা জীবিত কর। (বুখার) ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি দুনিয়ায় কোন ছবি বা মূর্তি নির্মাণ করবে (কিয়ামতে) তাকে এর মধ্যে রূহ ফুঁকতে (প্রাণ দিতে) আদেশ করা হবে। অথচ সে ফুঁকতেই পারবে না (বুখারী ও মুসলিম ) ২ ডিসেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ/ রাসেল/মাহমুদ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে