মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ: পরিবর্তিত জীবন ধারায় মানুষের সংস্কৃতিতে আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এ বিষয়ে জানতে অনেকে আলেমসমাজের শরণাপন্ন হয়ে থাকেন। সংক্ষেপে এখানে সে প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে।
বিবস্ত্র হয়ে অজু বা গোসল করা সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি এমন : প্রয়োজন ছাড়া বাথরুমে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করা উচিত নয়। হাদিসে এ ব্যাপারে অনুৎসাহিত করা হয়েছে। সুতরাং তা পরিহার করা উচিত। এক হাদিসে এসেছে, মুয়াবিয়া বিন হাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি তোমার স্ত্রী ছাড়া অন্যদের কাছ থেকে তোমার লজ্জাস্থান সর্বদা হেফাজত করো (অর্থাৎ ঢেকে রাখো)।’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! যদি কোনো ব্যক্তি কোথাও একাকী থাকে! (তখনো কি তা ঢেকে রাখতে হবে?)।’ তিনি বলেন, ‘অবশ্যই, কেননা আল্লাহকে অধিক লজ্জা করা উচিত।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৬৯)
তবে কেউ যদি কোনো কারণে বিবস্ত্র হয়ে অজু বা গোসল করতে চায়, তাহলে লোকচক্ষুর আড়ালে করলে এর অবকাশ আছে। বিশেষত, স্বামী ও স্ত্রী একসঙ্গে গোসল করার কথা হাদিসে এসেছে। মহানবী (সা.) তাঁর স্ত্রী মাইমুনা (রা.) ও আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে একত্রে গোসল করেছেন। এটি সহিহ বুখারি ও মুসলিম দ্বারা প্রমাণিত। এ বিষয়ে কেউ কেউ মুসা (আ.)-এর বিবস্ত্র হয়ে গোসল করার ঘটনাও প্রমাণ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। (দেখুন : বুখারি, হাদিস : ৩৪০৪)
সুতরাং এ বিষয়ে অবকাশ থেকে যায়, যদিও এটি সুন্নত নয় এবং অনুত্তম কাজ।
আর একটি বিষয় হলো, বিবস্ত্র হয়ে অজু বা গোসল করলে অজু হওয়া-না হওয়া এবং গোসল হওয়া-না হওয়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। অজু ও গোসলের অঙ্গ পরিপূর্ণভাবে ধৌত হয়ে গেলে বিবস্ত্র থাকলেও অজু ও গোসল হয়ে যাবে।