ইসলাম ডেস্ক: ইসলামের ইতিহাসে অনেক সময় দেখা যায় বহুকাল থেকে কিছু জাল হাদিস প্রচারিত হয়ে আসছে। জাল হাদিসের কবল থেকে রক্ষা পেতে প্রতিটি মুসলমানকে অবশ্যই সহীহ হাদিস সম্পর্কে জানতে হবে এবং অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।
সাহীহ (নির্ভরযোগ্য) হাদিস: যেই হাদিসগুলো নবী ﷺ এর কাছ থেকে এসেছে—এর পক্ষে যথেষ্ট নির্ভরযোগ্য প্রমাণ আছে বলে হাদিস বিশারদরা অনেক গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন তাকে সহীহ হাদিস বলে।
“সাহীহ বুখারি” এবং “সাহিহ মুসলিম” দুটি প্রধান সাহিহ হাদিসের সংকলন। সাহিহ হাদিসের উপর নির্ভর করে শারিয়াহ (আইন) তৈরি হয়। তবে সাহিহ হাদিস কয়জন বর্ণনা করেছেন, তার উপর নির্ভর করে কিছু প্রকারভেদ রয়েছে, যার উপর ভিত্তি করে হাদিসটির নির্ভরযোগ্যতা কতখানি সন্দেহাতীত, তা কম-বেশি হয়। যেমন মুতাওয়াতির – যে হাদিসগুলো এত বেশি বর্ণনাকারী বর্ণনা করেছেন যে তা ভুল হবার সম্ভাবনা নেই; আহাদ (বিচ্ছিন্ন) ঘারিব (অদ্ভুত) হাদিস – যে হাদিসগুলোর বর্ণনাকারীদের কোনো এক পর্যায়ে শুধুই একজন সাক্ষি পাওয়া গেছে, যার ফলে তা মুতাওয়াতির সহিহ হাদিসের মত সন্দেহাতীত নয়, কারণ সেই একজন বর্ণনাকারী, হাদিস বর্ণনা করার সময় ভুল করতে পারেন।
*বিখ্যাত হাদিস বিশারদ ইমাম ইবন আল-সালাহ তার মুকাদ্দিমাহ বইয়ে বলেছেন যে, “কোনো হাদিস সাহিহ হবার মানে এই নয় যে হাদিসের বাণীটি অকাট্য সত্য। একটি হাদিসকে সাহিহ তখনি বলা হয় যখন তা ৫টি শর্ত পূরণ করে। এই পাঁচটি শর্ত পূরণ করার পরেও একটি সাহিহ হাদিসের বর্ণনায় ভুল থাকতে পারে।” ইমাম তিরমিযি তার বইয়ে বলেছেন যে, তিনি তার সুনানে দুটি সাহিহ হাদিস অন্তর্ভুক্ত করেছেন, যেগুলো হাদিস সাহিহ হবার সকল শর্ত পূরণ করে, কিন্তু তারপরেও সংখ্যা গরিষ্ঠ উলামাদের ইজমা অনুসারে সেই হাদিসগুলোর বাণী ভুল এবং তাদের উপর আমল করা যাবে না। সুতরাং কী ধরণের সাহিহ হাদিসের উপর আমল করা যাবে এবং কোনটার উপর আমল করা যাবে না, সেটা আপনাকে একজন যথাযথ হাদিস বিশারদের (মুহাদ্দিস) কাছ থেকে জানতে হবে। [* মুফতি তাকি উসমানী, দারুল ইফতা]
২৯ জুলাই,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর