১. নিজে ত্রুটিমুক্ত থাকুন: আপনি যেসব দোষ আপনার স্বামীর দেহ-মন কিংবা আচরণ থেকে বদলে ফেলতে চান, প্রথমত আপনাকে সে-সব আচরণ থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কোনোক্রমেই সে সব আচরণ তার সামনে যেনো প্রকাশ পেয়ে না যায়, সে জন্যে সাবধান থাকুন।
২. তাকে বলুন, সে একজন ভালো মানুষ: এটা আপনাকে ও আপনার স্বামীকে সব রকমের মনমালিন্য থেকে দূরে রাখবে। তাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। তার দোষগুলো তার সামনে উপস্থাপন না করে বরং কৌশলে বোঝানোর চেষ্টা করুন, তার এ কাজটি করা তেমন ভালো হয় নি।
৩. চূড়ান্ত সময় বেঁধে দেবেন না: অনেকবার হয়তো ভেবেছেন চূড়ান্ত কোনো সময় বেঁধে দেবেন। ভেবেছেন বলবেন, ‘যদি এটা বন্ধ না হয়, তাহলে কিন্তু চললাম, নিজের পথ বেছে নিলাম।’ এভাবে সময় বেঁধে দিয়ে সম্পর্ক আদৌ ঠেকানো যায় না। মনোবিদদের মতে, আপনি যদি সত্যিই সম্পর্ক অথবা সংসার টিকিয়ে রাখতে চান, তাহলে এহেন ‘শেষ কথা তত্ত্ব’ থেকে বেরিয়ে আসুন।
৪. তাকে ভালো বই পড়তে দিন: হ্যাঁ, ভালো বই তাকে পড়তে দেয়া একটি অসাধারণ কাজ হবে। তবে এটা তাকে সরাসরি দিলে, সে অন্যকিছু ভাবতে পারে। তাই ভালো কিছু বই তার চারপাশে রেখে দেয়ার ব্যস্থা করুন। তার শোবার ঘরে, গাড়ির সামনের বক্সে কিংবা ড্রয়িংরুমেও রাখতে পারেন। তবে তাকে পড়তে অনুরোধ করবেন না।
৫. ক্ষমতা দেখানোর চেষ্টা পরিহার করুন: ‘তোমার আচরণ অসহনীয়। আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো’এ ধরনের হুঁশিয়ারি কিছুটা ক্ষমতায়নের কাজ করে। ভাবখানা এমন যেন পুরো ব্যাপারটির নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতে চলে আসছে। কিন্তু একবারও কি ভেবেছেন আখেরে এর পরিণতি কী। মনে রাখবেন, পরিবারে পুরুষ তার থেকে ক্ষমতাধর কাউকে সহ্য করে না।
৬. তার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করুন: স্বামী অথবা সঙ্গীটি যদি আরেকটি সম্পর্ক বজায় রাখেন, আসক্ত হন, পরিবারের চেয়ে কর্মক্ষেত্র অথবা অন্যত্র বেশি আগ্রহী হন, তাহলে বুঝতে হবে সে নিজের ভেতরে সুখী হবার প্রেরণা পাচ্ছে না। সে জানে, তার কাজটি ভুল। তার যে অনুতাপ হয় না, তা নয়। সমস্যা হলো, তার মনের ভেতরে সুপথে আসার, শুদ্ধ হওয়ার তাগিদ নেই। সঙ্গীকে সুপথে আসতে প্রাণিত করতে তার সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় করতে হবে।
৭. প্রমাণ করুন, আপনি তার একান্ত অনুগত: নারীর ভালোবাসায় পুরুষ গলে যাবে ঠিকই, কিন্তু সেজন্য নারীকে হতে হবে এমন নম্র ও শান্ত এবং এতটা ধীমতি ও প্রণতিপরায়ণা যে, পুরুষ অনুভব করে যেনো আপনি তার ‘একান্ত অনুগত’ এবং ‘তার বাসনায় পরিচালিত’। আপনি তার হাতের থেকেও বেশি অনুগত হয়ে যান এবং তার দিবাস্বপ্নের চেয়ে অধিক সজাগ থাকুন।
৮. তাকে বেশি বেশি সময় দিন: স্বামীর আচরণ ভালো লাগছে না বলে তার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করবেন না। এতে সে আরো মন্দ লোকদের দলে ভিড়ে যাবার সুযোগ পাবে। তার কাছাকাছি থাকুন। তাকে আপনার কাজে সহায়তা করার সুযোগ দিন। বোঝান, সে ছাড়া আপনার একদম ভালো লাগে না। এ চেষ্টায় একবার নিরত হলেই পেয়ে যাবেন তাকে প্রভাবিত করার চাবিকাঠি।
৯. আপনিই আগে ক্ষমা চান: দাম্পত্যে ঝগড়া কার হয়না বলুন? কিন্তু ঝগড়া হলেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকবেন না, কিংবা স্বামীর থেকে নিজেকে আলাদা করে নেবেন না। নিজের দোষ কম হোক অথবা বেশি, নিজেই উদ্যোগী হয়ে ক্ষমা প্রাথনা করুন। যদি অন্য স্বামীর দোষ হয়ে থাকে, তাহলেও তাকে দোষারোপ করবেন না। তাতে সে কখনও আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে পারবে না।
১০. রাগের কারণ বুঝতে চেষ্টা করুন: বিয়ের পর আবিষ্কার করলেন আপনার স্বামী মাঝেমধ্যে রেগে যান। প্রথম থেকেই এ ব্যাপারে সচেতন হোন। রাগের কারণ বুঝতে চেষ্টা করুন। তারপর তাকে জানান যে, এখন আর সে একা নয়, আপনিও তার সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করতে পারেন।
মনে রাখবেন, নারীকে সৃষ্টি করা হয় নি পুরুষের মাথার অংশ থেকে, যেনো সে মর্যাদায় পুরুষকে ছাড়িয়ে না যায়। পুরুষের পায়ের অঙ্গ থেকেও সৃষ্টি করা হয় নি তাকে, যেনো সে পুরুষের কাছে অবহেলার পাত্র না হয়। নারীকে বের করা হয়েছে পুরুষের পাঁজর থেকে, যেনো সে থাকে তার বাহুর নীচে, হৃদয়ের কাছে। যেনো পুরুষ তাকে ভালোবাসতে পারে এবং তার থেকে ভালোবাসা পেতেও পারে। নারীর ভালোবাসা ও সহমর্মিতা এমন চমৎকার এক ঝরনার উৎসরণ ঘটাতে পারে, যার পরশ পেলে অনায়াসে গলে যাবে পুরুষের মস্তিষ্ক। যেমন পানির গভীরতা পাথরকেও নরম করে ফেলে এবং গলিয়ে দেয়। কেবল ভালোবাসার মাধ্যমেই জেগে উঠবে তার হৃদয়, তার বিবেক। ঘুম ভাঙবে তার চেতনার। সচেতন হবে সেতার সম্পদ ও ভবিষ্যতের ভাবনায়।
১০আগস্ট, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জই/আআজু