ইসলাম ডেস্ক : নামাজটা জরুরি ভাই, নামাজ ছাড়া উপায় নাই, নামাজ বেহেস্তের চাবি ভাই, আল্লাহর পাগল, আল্লাহ ঠিক, আল্লাহর নবী ঠিক- এমন ভালো কথার দ্বারা মানুষকে সর্বদা সৎপথে ডাকার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন ঢাকার দোহার উপজেলার দোহার খালপাড় এলাকার মৃত শেখ জালাল উদ্দিনের ছেলে শেখ জয়নাল আবেদীন।
এই আহ্বান নিত্যদিনের কাজে পরিণত করেছেন জয়নাল আবেদীন। এ অঞ্চলে সবাই তাকে একনামে চেনে। এই দ্বীনি দাওয়াতের মধ্যে পার্থিব কোনো স্বার্থ নেই, বরং পরকালের লাভের আশায়ই মানুষকে ভালো কাজের দিকে উদ্বুুদ্ধ করছেন বলে জানান এলাকাবাসী।
দুুই ভাই আর পাঁচ বোনের মধ্যে জয়নাল সবার ছোট। বড় ভাই স্থানীয় একটি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। জয়নাল ১৫ বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন চাকরির সুবাদে। সেখানে চাকরি করছেন ৯ বছর। সৌদি আরবে থাকাকালীন বিয়েও করেন। বর্তমানে ৮ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
২০১২ সালের দিকে সৌদি আবরে থাকাকালীন বাবা জালাল উদ্দিনের অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটিতে দেশে আসেন জয়নাল আবেদীন। দেশে থাকা অবস্থাতেই মারা যান জয়নাল আবেদীনের বাবা জালাল উদ্দিন। জালাল উদ্দিনও দীঘদিন মানুষকে ঈমানের দাওয়াত দিয়েছেন। জালাল উদ্দিনকে সবাই আল্লার পাগল বলে একনামে চেনে।
বাবার মৃত্যুর কিছুদিনের মধ্যেই জয়নাল সৌদি আরবে চলে গেলেও সেখানে আর বেশিদিন থাকা হয়নি তার। এক বছরের মাথায় সৌদি আরব থেকে একেবারে চলে আসেন দেশে। বর্তমানে জয়নাল তার বাবার দেখানো পথেই হাঁটছেন। তার এই কাজকে সবাই ভালো দৃষ্টিতে দেখেন। গত ৮ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে ইসলামের প্রচার প্রচারণার কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার আচরণে সবাই মুগ্ধ।
ফজরের নামাজের পর বাড়ি থেকে বের হয়ে দুটি উপজেলা অর্থাৎ নবাবগঞ্জ ও দোহারের রাস্তায়, হাটে-বাজারে, মাঠে-ঘাটে যেখানেই মানুষের সমাগম দেখেন সেখানেই নামাজের দাওয়াত দেন। বিশেষ করে প্রত্যেক নামাজের ওয়াক্তের আগে নামাজের সংকেত দিয়ে যান যাতে মুসল্লিরা ব্যস্ততা কাটিয়ে নামাজে যেতে পারেন। তিনি নিজেও জামাতের সাথে ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন, পাশাপাশি মানুষকে সৎপথের দিকে আহবান করেন।
এ ব্যাপারে সুতারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: সুরুজ মিয়া জানান, জয়নাল আবেদীন একজন আল্লাহভক্ত মানুষ। নিজেও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সাথে পড়েন এবং পরিবারের লোকজনসহ এলাকার সবাইকে নামাজের ব্যাপারে তাগিদ দেন। অনেকে পাগল বললেও আমি তাকে ভালো মানুষ হিসেবে জানি।
এ ব্যাপারে কথা হয় জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী ইসমত আরার সাথে। তিনি বলেন, ‘তিনি (জয়নাল) নয় বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আমার শ্বশুর যখন মারা যান তখন থেকেই তিনি একটু অন্যরকম হয়ে যান। আমরা মনে করেছিলাম হয়তো তার মানসিক সমস্যা হয়েছে। ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করিয়েছি কিন্তু আগের মতো স্বাভাবিক হচ্ছে না। মনেপ্রাণে আল্লাহকে বিশ্বাস করেন বলেই মানুষকে ভালো কাজের দিকে ডাকেন।’