মসজিদ মুসলিম সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পূর্বতন মুসলিম ইতিহাসবিদদের তথ্যানুসারে, যেসব শহর মুসলিম আভিযানে সময় বিনা প্রতিরোধে বিজিত হয় এবং মুসলমাদের সাথে চুক্তি করে তাদের উপাসনাগুলো মসজিদের জন্য দিয়ে দেয়।
এই ধরনের রূপান্তরের একটি প্রথমিক উদাহরণ হলঃ ৭০৫ খ্রিস্টাব্দে উমাইয়া খেলাফতের আল-ওয়ালিদ জন ব্যপ্টিস্ট চার্চ (দামস্কস, সিরিয়া) খ্রিস্টানদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে তা মসজিদ হিসাবে পুনঃনির্মাণ করেন এবং দামস্কসে খ্রিষ্টানদের জন্য আরো কিছু চার্চ নির্মাণ করেন। বলা হয় যে, আদ্ আল-মালিক (আল-ওয়ালিদের পিতা) এই ধরনের দশটি মসজিদের নির্মাণ করেন।
সম্প্রতি, ইসরায়েল কর্তৃক দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড নেগেব মুরু অঞ্চলের রাহাত এলাকায় বসতি স্থাপনের প্রস্তুতিকালে ১২০০ বছরের এক পুরোনো মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আর বিশ্বব্যাপী প্রাচীন স্থাপনা আবিষ্কারে নিয়োজিত প্রত্নতত্ত্ববিদরা জানান এ মসজিদটি হতে পারে মসজিদে আকসার পরে সবচেয়ে পুরোনো ধর্মীয় প্রার্থনার স্থান মসজিদ।
পুরোনো স্থাপনা আবিষ্কারে নিয়োজিত প্রত্নতত্ত্ববিদরা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ফিলিস্তিনের ইসরায়েল দখলকৃত নেগেব মরুভূমির রাহাত অঞ্চলের বেদুইন অধ্যুষিত এলাকায় এ পুরোনো মসজিদের সন্ধান মিলেছে বলে ঘোষণা দেন তারা।
সপ্তম কিংবা অষ্টম শতাব্দীতে নির্মিত এটি একটি ছোট শহুরে মসজিদ। এর অবস্থান বয়স ও নির্মাণ শৈলীর ওপর নির্ভর করে এটি পৃথিবীর বিরল আবিষ্কারের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনাও রয়েছে। মসজিদটি খনন কাজের দায়িত্বে থাকা জন সেলিগম্যান ও শাহার জুবা নামক কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
নেগেব মুরু অঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর বায়ের এলাকার উত্তরে এ ধরনের পুরোনো স্থাপনা এর আগে কখনও আবিষ্কৃত হয়নি। কাবা অভিমুখী করে চতুর্ভুজ আকৃতির এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পবিত্র নগরী মক্কার দিকে তৈরি মেহরাব দেখে সহজেই এটাকে মসজিদ হিসেবে চিহ্নিত করে।
মসজিদটি ছাড়াও এখানে পুরোনো কৃষি খামার আবিষ্কৃত হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, কৃষি খামারে অবস্থানরত কৃষকরাই এ মসজিদটি ব্যবহার করতেন। এ মসজিদের ব্যাপারে প্রত্নতাত্ত্বিক গিদিওন আবনি বলেন, ‘নির্মাণের সময় বিবেচনায় মসজিদে আকসার পর এ মসজিদটিই এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরোনো মসজিদ। কেননা ৬৩৬ সালে আরবরা এ অঞ্চল বিজয় করেছিলেন।
প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের খনন পরিচালক জন সেলিগম্যান ও শাহার জুর বলেন, প্রায় ১২০০ বছরের পুরোনো এ মসজিদের খোঁজ পাওয়ার ঘটনাটি বিশ্বের বিরল আবিষ্কারগুলোর মধ্যে অন্যতম। মসজিদটির বৈশিষ্ট্য দেখলেই বোঝা যায় যে, সে সময় মসজিদ ভবনটি কোন কোন কাজে ব্যবহার করা হতো।