ইসলাম ডেস্ক: মার্টিন বিশপ, তিনি জন মাইপোপল নামেও পরিচিত ছিলেন। তানজানিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে বিলোসায় ১৯৩৬ সালের ২২ ডিসেম্বরে তাঁর জন্ম। চার্চের পরিবেশেই মার্টিন বড় হন। ১০ ভাই-বোনের মধ্যে মার্টিন তৃতীয়। তাঁর ইচ্ছা ছিল পুলিশ হওয়ার। আর মা-বাবা চাইতেন মার্টিন হবে একজন খ্রিস্টান পুরোহিত। কিন্তু তিনি খাঁটি মুসলিম হয়ে গেলেন।
১৯৬০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। মার্টিন একজন শিক্ষানবিশ ধর্মযাজক হিসেবে চার্চে যোগদান করেন। ফলে খ্রিস্টান ধর্ম ও এর শিক্ষা সম্পর্কে তাঁর যথেষ্ট জ্ঞান অর্জিত হয়। ১৯৭৩ সালে মার্টিন জার্মানিতে যান ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করার জন্য। ওই বছরই সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি একজন উচ্চপদস্থ ধর্মযাজক হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। চার্চের আগের ধর্মযাজক বিদায় নিলে মার্টিনকেই চার্চের প্রশাসকের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হয়।
ধর্ম যাজক হলেও মার্টিনের মাথায় একটা প্রশ্ন ঘুড়তে থাকে। ‘কেন যিশু ক্রুশবিদ্ধ হলেন?’ বাইবেলের আলোকে তিনি তাঁর জবাব পাওয়ার চেষ্টা করলেন। কিন্তু তাতে তিনি কোনো জবাবই খুঁজে পেলেন না। তাঁর অন্য প্রশ্ন ছিল যিশু খোদার সন্তান হলেন কিভাবে? তারও কোনো জবাব পেলেন না মার্টিন।
বাইবেলের আলোকে প্রশ্নের জবাব খুঁজে না পেয়ে মার্টিন ঠিক করলেন ইসলাম থেকে তিনি তার একটা জবাব পাওয়ার চেষ্টা করবেন। তখন থেকে তিনি বহু বই পড়া শুরু করলেন। হঠাৎ এক রাতে তিনি একটা স্বপ্ন দেখলেন। তাঁর স্ত্রী তাঁকে জাগিয়ে তুললেন। স্ত্রী বললেন, ‘মার্টিন স্বপ্নে ইসলামের কোনো এক নবীর কথা বারবার উচ্চারণ করছিল।’ মার্টিন স্ত্রীর কথা শুনে কিছুই বললেন না। সকালে খাওয়াদাওয়া সেরে তিনি বেরিয়ে পড়লেন শহরে।
সেই যে স্বপ্ন দেখে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লেন, ওই দিনেই তার জীবনটা বদলে গেলো। বাসার জন্য বিভিন্ন জিনিস নিয়ে তিনি যখন ঘরে ফিরছিলেন তখন ছিল মাগরিব নামাজের সময়। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে একটি মসজিদে যাওয়ার জন্য মনস্থির করলেন। তখন তাঁর পরনে ছিল খ্রিস্টান ধর্মযাজকের পোশাক। তিনি যখন মসজিদে ঢুকলেন তখন মুসল্লিরা কিছুটা বিস্মিত হলো। তারা তাঁকে মসজিদে ঢোকার কারণ জিজ্ঞেস করলেন।
মার্টিন জানালেন, তিনি তাদের সঙ্গে নামাজ পড়বেন। মার্টিন ইমাম শেখ আহমারার সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। আগে থেকেই আহমারার সঙ্গে মার্টিনের পরিচয় ছিল। মার্টিন আহমারার কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করলেন। ইমাম সাহেব মার্টিনের প্রস্তাব শুনে এটাকে নিছক কৌতুক বলে ভাবলেন। অথচ মার্টিন ছিলেন খুবই সিরিয়াস। তিনি ইসলাম গ্রহণ করবেনই করবেন। ইমাম সাহেব মার্টিনকে জুতা খুলে পবিত্র হয়ে আসতে বললেন। ইমাম সাহেব মার্টিনের হাত ধরলেন এবং তাঁকে কালেমা পড়িয়ে মুসলমান করে নেন। সেই মানুষটি এখন আবু বকর জন মাইপোপল।