ইসলাম ডেস্ক : সময়ের গতিশীলতা ও প্রচলিত পরিমাপের ধারণার (দিন, সপ্তাহ, মাস, বছর ইত্যাদি) ভিত্তি পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্যের গতিশীলতা। কোরআন এই ভিত্তিকে সমর্থন করে। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই সূর্যকে তেজস্কর ও চন্দ্রকে জ্যোতির্ময় করেছেন এবং তাদের গতিপথ (তিথি) নির্ধারণ করেছেন, যেন তোমরা বছর গণনা ও সময়ের হিসাব করতে পারো।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত ৫)
আল্লাহর এই বিধি লঙ্ঘিত হওয়ার নয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘সূর্যের জন্য সম্ভব নয় চন্দ্রের নাগাল পাওয়া, রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা। সবাই নিজ নিজ কক্ষপথে সন্তরণ করে।’ (সুরা : ইয়াসিন, আয়াত : ৪০)
কিন্তু মহান আল্লাহ কখনো কখনো সময়ের গতি থামিয়ে দিয়ে তাঁর ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ করেছেন এবং তা করেছেন দুইভাবে। এক. সময় গণনার মাধ্যম সূর্যকে থামিয়ে দিয়ে, দুই. সময়ের প্রভাব খর্ব করে।
সময় গণনার মাধ্যম সূর্যকে থামিয়ে দিয়ে সময়ের গতি থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইউশা ইবনে নুন (আ.)-এর সময়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘... তারা অভিযান পরিচালনা করল, তারা আসরের সময় বা তার নিকটবর্তী সময়ের জনপদের নিকটবর্তী হলো। তিনি (ইউশা ইবনে নুন) সূর্যের উদ্দেশে বললেন, নিশ্চয়ই তুমি আদিষ্ট এবং আমি আদিষ্ট। হে আল্লাহ! আপনি একে (সূর্য) আমাদের ওপর স্থির রাখুন। তাকে স্থির রাখা হলো যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের বিজয় দান করেছিলেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১২৪)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘মানুষের ওপর সূর্যকে কখনো স্থির রাখা হয়নি, তবে ইউশা (আ.)-এর জন্য রাখা হয়। যে রাতে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে সফর করেন।’ (ইবনুল কায়্যিম জাওজি, ফাদায়িলুল কুদস, পৃষ্ঠা. ১১৩)
সময়ের সব ধরনের নিয়ন্ত্রণ আল্লাহর হাতে। তিনি তাঁর প্রজ্ঞার আলোকে সময়কে একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আবদ্ধ করেছেন। যেদিন এই শৃঙ্খলা ভেঙে যাবে এবং সময়ের গতি থেমে যাবে, সেদিন প্রতিশ্রুত কিয়ামত সংঘটিত হবে। আল্লাহ বলেন, ‘যখন চোখ স্থির হয়ে যাবে, চাঁদ জ্যোতিহীন হবে এবং সূর্য ও চন্দ্রকে একত্র করা হবে, সেদিন মানুষ বলবে, পালানোর জায়গা কোথায়?’ (সুরা : কিয়ামা, আয়াত : ৭-১০)
-আতাউর রহমান খসরুর লেখা থেকে