ইসলাম ডেস্ক : নাম তার ইরিনা হানদোনো। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ইন্দোনেশিয়ার এক সম্পদশালী ধার্মিক খ্রিষ্টান পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা। ১৯৮৩ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন তিনি।
তবে ইসলাম গ্রহন তার জন্য সহজ ছিল না। স্রষ্টার জন্য জীবন উৎসর্গ করার প্রবল ইচ্ছার কারণে ছোটবেলা থেকেই ইরিনা হানদোনো ধর্মীয় আবহে নিজেকে তৈরির আকাঙ্ক্ষা পোষণ করতো। কিন্তু পরিবারের ৫ সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে হওয়ায় প্রথম দিকে তার এ আকাঙ্ক্ষা পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
সত্য ধর্ম অনুসন্ধানের জন্য গির্জার বাইরে অন্য ধর্ম-দর্শন বুঝার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ শুরু করেন তিনি। সে সময়ই প্রথম ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে ইরিনা।
ইসলাম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভে ইরিনা শিক্ষকের কাছে অনুমতি চায়। তার ইচ্ছে ছিল ইসলাম সম্পর্কে ত্রুটি বিচ্যুতি খুঁজে বের করা। সে আলোক ইসলামের বিরোধিতা করার রসদ খুঁজতে কুরআন অধ্যয়ন শুরু করে ইরিনা।
শুরুতেই তার চোখে পড়ে কুরআনুল কারিমের অন্যতম প্রসিদ্ধ সুরা। আর তাহলো সুরা ইখলাস। তাতে তিনি পড়েন-
‘বলুন! তিনি আল্লাহ! তিনি এক। তিনি অমুখাপেক্ষী। তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কারো থেকে জন্ম নেননি। কেউ তার সমকক্ষ নয়।’ (সুরা ইখলাস)
কোরআনের এই সুরা পড়ে মুগ্ধ হন ইরিনা । আমার অন্তর সাক্ষ্য দিল আল্লাহ এক। স্রষ্টার কোনো সন্তান নেই। তিনি কারো সৃষ্টি নন। কোনো কিছুই তাঁর সমকক্ষ নয়। সুরা ইখলাস পাঠ করার পর কয়েকজন যাজকের কাছে স্রষ্টায় বিশ্বাসের মূলকথা কী জানতে চাইলেন।
কিন্তু যাজকদের যুক্তি হজম করতে পারলেন না ইরিনা । এরপর মুসলিম হতে এবং নতুন ধর্মবিশ্বাসের প্রকাশ্য ঘোষণা দিতে তার ছয় বছর লেগেছিল। এক রাতে আবারও কোরআনের কাছে ফিরে এলেন । সুরা ইখলাস পাঠ করলেন, তিনি বলেন, “যেন কিছু আমার অন্তরে প্রবেশ করল। আমার কোনো সংশয় রইল না আল্লাহ এক। আমার ব্যক্তিগত চিন্তা ও গবেষণা থেকে বুঝতে পারলাম ত্রিত্ববাদের ধারণা মানুষের তৈরি, যার উদ্ভব হয়েছে ৩২৫ খ্রিস্টাব্দের পর।”
অবশেষে মহান আল্লাহর রহমতে সুরা ইখলাস’ই তাকে ইসলামের পথে ফিরিয়ে আনে। বর্তমানে একজন ইসলাম প্রচারক হিসেবে কাজ করছেন তিনি। শুধু তাই-ই নয়,নওমুসলিমদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ইরিনা সেন্টার’ নামে একটি স্কুল।