ইসলাম ডেস্ক: দিনকে দিন বিশ্বে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়েই চলছে। মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে অমুসলিম দেশগুলোও যেন পিছিয়ে নেই। ইউরোপের সর্ব উত্তরের দেশ নরওয়ে সম্পর্কে সম্প্রতি সংবাদমধ্যমের একটি প্রতিবেদন আমাকে বেশ চমৎকৃত করেছে। নরওয়ের প্রভাবশালী দৈনিক ভারডেনস গ্যাঙ্গ-এর বরাত দিয়ে তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কালচারাল স্টাডিজ অ্যান্ড অরিয়েন্টাল ল্যাঙ্গুয়েজ’ বিভাগের এক গবেষক আনাদোলুকে বলেন যে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রতি বছর অন্তত তিন হাজার নরওয়েজিয়ান ইসলাম গ্রহণ করছেন।
নও-মুসলিম নরওয়েজিয়ান নারী মনিকা সালমুক বলেছেন, চার বছর আগে বিভিন্ন ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা ও বিভিন্ন গ্রন্থ অধ্যয়নের পর নিজের জন্য ইসলামকে বেছে নিয়েছেন। আরেক নারী সোলভা নাবিলা স্যাঙ্গেলিন জানান, নরওয়েতে আশ্রয় নেয়া মুসলিম শরণার্থীদের সাহায্য করতে গিয়ে তাদের কাছ থেকে তিনি ইসলাম গ্রহণের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা সংস্থাগুলোর একটি যুক্তরাষ্ট্রের পিউ রিসার্সের গবেষণা বলেছে, বিশ্বের বর্তমান জনসংখ্যা ৭৩০ কোটি। যার মধ্যে ২৩০ কোটি খ্রিষ্টান, ১৮০ কোটি মুসলমান, হিন্দু ১১০ কোটি, ১১০ কোটি মানুষের বিশেষ কোনো ধর্ম নেই এবং বাকিরা অন্য ধর্মাবলম্বী। বর্তমান বিশ্বে খ্রিষ্টান মায়েরা সবচেয়ে বেশি শিশুর জন্ম দিচ্ছে। কিন্তু আগামী ১৫-১৬ বছর তথা ২০৩৫ সাল নাগাদ এই চিত্র বদলাতে শুরু করবে। ২০১০ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বিশ্বে ২২ কোটি ৩০ লাখ খ্রিষ্টান শিশু জন্ম নেয়। আর মুসলিম শিশুর জন্ম হয় ২১ কোটি ৩০ লাখ। কিন্তু ২০৩০-৩৫ মেয়াদে ২২ কোটি ৪০ লাখ খ্রিষ্টান শিশুর বিপরীতে ২২ কোটি ৫০ লাখ মুসলিম শিশু জন্ম নেবে।
অন্যদিকে , ২০৬০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা ৯৬০ কোটিতে দাঁড়াবে বলেও এক গবেষণায় বলা হয়েছে। এর মধ্যে আগামী ৩৫ বছরে, মুসলিমদের সংখ্যা বাড়বে ৭০ শতাংশ। মুসলিমদের জনগোষ্ঠীতে তরুণদের সংখ্যা হবে বেশি এবং প্রজনন হারও থাকবে বেশি। এই সময়ে খ্রিষ্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হবে ৩৪ শতাংশ।
গবেষণা বলছে, ২০৬০ সালে বিশ্বে মুসলমানদের সংখ্যা হবে ৩০০ কোটি (মোট জনসংখ্যার ৩১ শতাংশ), আর খ্রিষ্টান হবে ৩.১ বিলিয়ন (মোট জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ)। ২০২০-৬০ সাল পর্যন্ত ৪০ বছরে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী সংখ্যা বাড়বে ৮০ কোটি (৩.১-২.৩)। অন্য দিকে, মুসলিম জনগোষ্ঠীর বাড়বে ১২০ কোটি (৩.০-১.৮)।