সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:০৪:১৫

‘রোজাদাররা যে দরজা দিয়ে জান্নাতে যাবেন’

‘রোজাদাররা যে দরজা দিয়ে জান্নাতে যাবেন’

হাফেজ মাওলানা আতাউল্লাহ : মুমিন বান্দার সেরা সময় রমজান। আল্লাহর শুকরিয়া যে, তিনি বছরের সব সময়কে একই রকম সম্মানিত করেননি বরং কোনো কোনো সময়কে অন্য সময়ের ওপর মর্যাদাবান করেছেন।

রমজান মাস হচ্ছে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে পছন্দের, তার রহমতে ভরপুর। আল্লাহতায়ালা চান যে, এই সময় আমরা যেন বেশি বেশি নেক আমল করি। এ মাসে নেক আমল করা সহজ করা হয়েছে। এ মাসে জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ এবং জান্নাতের দরজাগুলো প্রশস্ত উন্মুক্ত থাকে। শয়তান এ মাসে শিকলবন্দি।

রমজানের প্রতি রাতে আল্লাহপাক হাজার হাজার, লাখ লাখ লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন- যাদের নাম জাহান্নামিদের খাতায় লেখা হয়েছিল তারা রমজানের নেক আমলের উসিলায় জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যান।

যদি এ রমজান মাস পেয়েও আমরা নেককার বান্দা হতে না পারি, তাহলে আমরা বড়ই দুর্ভাগা হিসেবে পরিচিত হব। আমাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে। রোজা রেখে খুব সহজে জান্নাতি হওয়ার সুযোগ আমাদের জীবনে আর নাও আসতে পারে।

হজরত নবী করিম (সা.) এরশাদ করেছেন, রমজানজুড়ে যে রোজা রাখে, এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস ও আস্থাসহকারে এবং এ আশায় যে আল্লাহ তাকে পুরস্কার দেবেন, তাকে আল্লাহ ক্ষমা করবেন, সে যত বড় গোনাহগার হোক না কেন।

রমজান হচ্ছে সিয়াম ও কিয়ামের মাস- দিনে রোজা এবং রাতে তারাবি ও তাহাজ্জুদ জরুরি। যদিও তারাবি ও তাহাজ্জুদ ওয়াজিব নয়, তবু তা গোনাহ থেকে মুক্তি ও জান্নাত লাভের জন্য সাহায্যকারী। এ সুযোগ তো অন্য মাসে আসে না। আমরা যদি রোজার হক ঠিকমতো আদায় করি তাহলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, আর-রাইয়ান নামের একটি বিশেষ দরজা দিয়ে রোজাদারকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে। রাইয়ানের অর্থ যেখানে প্রচুর পানির ব্যবস্থা রয়েছে। কেয়ামতের দিন পানির জন্য হাহাকার করবে সবাই। সেই দিন যে রাইয়ান দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে সে কতই না ভাগ্যবান হবে।

রমজান তো সেই মাস যে মাসে প্রার্থনাকারীর প্রার্থনার জবাব দেন আল্লাহ। এবাদতকারীদের মর্যাদা উঁচু করে দেয়া হয়। এ মাস নেক আমল ও দান-খয়রাতের মাস। এ মাসে নেক আমলের ও দান-খয়রাতের সওয়াব বহু গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়। এ মাসে এই অভাবনীয় সুযোগের জন্য আমাদের খুশি হওয়া উচিত। পবিত্র এ মাসে আমাদের উচিত জীবনের সব গুনাহ খাতার জন্য আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা করা।

এ মাসে আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা করতে বলেছেন তা করা এবং যা করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। আমরা যেন চুরি, জিনা না করি, অন্যের ওপর জুলুম না করি, পিতা-মাতাকে কষ্ট না দিই। আমরা যেন কারও অগোচরে তার নিন্দা না করি, কারও ওপর অপবাদ না দিই, মিথ্যা কথা না বলি, মিথ্যা ওয়াদা না করি, আত্মীয়-স্বজনকে কষ্ট না দিই। আমরা যেন গান-বাদ্য এবং নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা থেকে বিরত থাকি। এসব পাপ কাজ সারা বছরের জন্যই নিষিদ্ধ, রমজানে এসবের গোনাহ ও ক্ষতি আরও গুরুতর আকার ধারণ করে। আমরা একে অপরকে ‘আমরি বিল মারুফ’ অর্থাৎ নেক কাজে অনুপ্রাণিত করি এবং ‘নাহি আনিল মুনকার’ অর্থাৎ পাপ কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করি। আশা করা যায়, এতে আমরা পবিত্র রমজানে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভ করতে পারব এবং আল্লাহপাকের ওয়াদাকৃত মুক্তি ও কল্যাণ অর্জন করতে পারব।-যুগান্তর

লেখক : প্রধান ইমাম ও খতিব, কারওয়ান বাজার আম্বারশাহ শাহী মসজিদ, ঢাকা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে