শরিফ সাইদুর: এই কয়েকদিন বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ঈদের ছবি দেখলাম। কিন্তু আফ্রিকার ছবিগুলো আমার কাছে বেশি সুন্দর লেগেছে। যেসব দেশগুলোকে আমরা খুব গরিব হিসেবে জানি সেসব দেশের ঈদ খুব নির্মল ও সুন্দর লেগেছে।
বললে রাগ করবেন। এই কয়েকদিন অনেকেই কুরবানি করার ছবি দিয়েছেন। উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটে তাতে অসুবিধার কিছু নেই। অনেক সময় জরুরিও হয়তো। কিন্তু আফ্রিকার দেশগুলোর ছবিগুলোতে যেই শান্ত ও স্নিগ্ধ পরিবেশ দেখলাম, বাংলাদেশি একজনের ছবিতেও তা দেখলাম না। হয়তো আমার দেখার ভুল।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আফ্রিকার কালো মানুষদের খুব ভালোবাসতেন। কোন এক নামহীন আফ্রিকান নারী সাহাবি মসজিদে নববি ঝাড়ু দিতেন। তিনি ইন্তেকাল করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন শুনলেন সে নারী ইন্তেকাল করেছেন তখন তিনি তাঁর ক'বরে গিয়ে জা'নাজা আদায় করেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ক'বর'স্থ করার পর সর্বশেষ যে সাহাবির হাতের স্পর্শ লাগে তিনি ছিলেন একজন আফ্রিকান। যিনি ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাওলা (আযাদকৃত দাস। এক ইতিহাস এমনই শুনেছি)
রাসূলের পুরো জীবনকে পর্যবেক্ষণ করলে দেখি তিনি আজীবন আফ্রিকার কালো মানুষদের ভালোবেসেছেন, তাদের সাথে নিজেকে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে নিয়েছিলেম। যাদের প্রায় সবাই ছিলো দাস, তাদের মর্যাদা তিনি বাড়িয়ে ছিলেন। কোন মুসলিম সমাজে কালোদের হেয় করে ডাকা বা তাদেরকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা আসলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের প্রতি অবমাননা।
এবার ছবিটার দিকে তাকান। ছবিটায় দেখা যায় মুসল্লিরা বালুময় মাঠেই নামাজ আদায় করছে। এইখানে একটা বিশেষ দিক লক্ষ্য করা যায়। মানুষ মাটির যত নিকটে আল্লাহরও তত নিকটে। মানুষ প্রকৃতির যতো নিকটে আল্লাহর তত নিকটে। এই আফ্রিকার মানুষগুলো সাধারণ হালাতে আছে বলেই হয়তো নিজেদের কলবকে ভালোভাবে অনুধাবন করতে পারে। অনেক আধুনিক মানুষ নিজেদের অন্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেকেও আমার মনে হয় এই মানুষগুলো এখনো তাদের অন্তর থেকে বিচ্ছিন্ন হয় নি।