ইসলাম ডেস্ক : সিয়াম সাধনার রমজান মাস। আত্মশুদ্ধির মাস। নিয়ত ছাড়া কোনো আমলই গ্রহণযোগ্য নয়। রাসুল সা. বলেছেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত আমল নিয়তের উপরই নির্ভরশীল, আর প্রতিটি ব্যক্তিই যা নিয়ত করে তাই সে পায়’। (বুখারি)।
নিয়ত ছাড়া সারাদিন না খেয়ে থাকলেও রোজা আদায় হবে না। তবে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয়। অন্তরে রোজার নিয়ত করাই যথেষ্ট। রোজার উদ্দেশ্যে সেহরি খেলেই রোজার নিয়ত হয়ে যায়। (আদ দুররুল মুখতার : ৩/৩৪১)
যেসব কারণে রোজা ভেঙে যায়
১. নাক বা কানে ওষুধ প্রবেশ করানো। ২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করা। ৩. কুলি করার সময় গলার মধ্যে পানি চলে যাওয়া। ৪. নারী স্পর্শ বা এ সংক্রান্ত কোনো কারণে বীর্য বের হওয়া। ৫. খাদ্য বা খাদ্য হিসেবে গণ্য নয়, এমন কোনো বস্তু গিলে ফেলা। ৬. আগরবাতির ধোঁয়া ইচ্ছা করে গলা বা নাকের মধ্যে প্রবেশ করানো। ৭. বিড়ি-সিগারেট পান করা। ৮. ভুলে খেয়ে ফেলার পর ইচ্ছা করে পুনরায় খাওয়া। ৯. সুবেহ সাদিকের পর খাবার খাওয়া। ১০. বুঝে হোক বা না বুঝে, সূর্য ডোবার আগে ইফতার করা। ১১. ইচ্ছা করে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করা।
যেসব কারণে রোজা ভাঙে না
১. মিসওয়াক করা। ২. মাথায় বা শরীরে তেল লাগানো। ৩. চোখে ওষুধ বা সুরমা লাগানে। ৪. গরমের কারণে পিপাসায় গোসল করা। ৫. সুগন্ধি ব্যবহার করা। ৬. ইনজেকশন বা টিকা দেয়া। ৭. ভুলে পানাহার করা। ৮. ইচ্ছা ছাড়াই ধুলাবালি বা মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করা। ৯. কানে পানি প্রবেশ করা। ১০. দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হওয়া।
যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়
বিনা কারণে জিনিস চিবিয়ে বা লবণ কিংবা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা। যেমন- টুথপেস্ট, মাজন, কয়লা ইত্যাদি দিয়ে দাঁত মাজা। ২. গোসল ফরজ অবস্থায় সারাদিন গোসল না করে থাকা। ৩. শরীরের কোথাও শিঙা ব্যবহার করা বা রক্ত দান করা। ৪. পরনিন্দা করা। ৫. ঝগড়া করা। ৬. রোজাদার নারী ঠোঁটে রঙিন কোনো বস্তু লাগানো, যা মুখের ভেতর চলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ৭. রোজা অবস্থায় দাঁত ওঠানো বা দাঁতে ওষুধ ব্যবহার করা; তবে একান্ত প্রয়োজনে তা জায়েজ।
বমি করলে কি রোজা ভাঙবে?
রোজা থাকা অবস্থায় যদি কারো স্বাভাবিক বমি হয়- মানুষ তা ঠেকাতে সক্ষম হয় নয়, সেই বমিতে রোজা ভাঙবে না। অবশ্য এক ছোলা পরিমাণ বমি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে পেটের ভেতর চলে যায় তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। সে রোজার কাযা আদায় করা ওয়াজিব।
যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করে (মুখে আঙুল দিয়ে বা অন্য কোনো উপায়ে) তাহলে রোজা ভেঙে যাবে। পেটের ভেতর কিছু যাক আর না যাক। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যাকে বমি পেয়ে বসে তার জন্য কোনো কাযা নেই কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে সে যেন কাযা করে নেয়’। (তিরমিজি, আবু দাউদ)।
উল্লেখ্য, মুখ ভরে বমি না হলে রোজা নষ্ট হবে না (আহছানুল ফাতাওয়া)।