চট্টগ্রামের রাউজানের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাড়ি মিয়া চৌধুরী এলাকায় আছে পাঁচ শ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী সাহেব বিবি মসজিদ। চুন সুরকির গাঁথুনিতে নির্মিত হয় দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপত্য। এর পাশে ও সামনে প্রায় চার ফুট উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে গেট। স্থাপনাটি আটটি পিলার, তিনটি দরজা, দুটি জানালা ও এক গম্বুজবিশিষ্ট। কারুকাজের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে শৈল্পিক রূপ। স্থাপত্যের পাশে খনন করা হয়েছে বিশাল দিঘি। পাঁচ শ বছর আগে নির্মিত স্থাপনাটি রূপগত পরিবর্তন করে বর্তমানে লাগানো হয়েছে টাইলস।
বাদশা মুহাম্মদ শাহ স্টেটের আমলে ডিমের আঠা, চুন-সুরকি দিয়ে দেশের ২২টি গ্রামে অভিন্ন নকশায় ২২টি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। ২২টি মসজিদের মধ্যে প্রথম নির্মিত হয়েছিল সাহেব বিবির মসজিদ। জানা যায়, জমিদার আমির মোহাম্মদ চৌধুরীর পত্নী ও চট্টগ্রামের আলোচিত প্রসিদ্ধ মালকা বানুর মাতা সাহেব বিবি এ মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা। মসজিদের পাশের ফুলবাগান সংবলিত কবরস্থানে শায়িত আছেন এটির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম সাহেব বিবি। এর পাশে আছে সাহেব বিবি দিঘি, যেটি শাহী পুকুর নামেও পরিচিত। মসজিদ ও কবরস্থান ৩০ শতক জায়গায় নির্মিত। কালের সাক্ষী এ মসজিদ দেখতে আসেন পর্যটকরা। স্থানীয়ভাবে জানা যায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার শোলকাটা রাউজান গ্রামের জমিদার আমির মোহাম্মদ চৌধুরীর স্বনামধন্য পত্নী মালকা বানুর মাতা সাহেব বিবি। ধারণা করা হয়, পাঁচ শ বছর আগে তিনি মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের আছে কারুকাজসংবলিত টেরাকোটার ইট ও চুন-সুরকির গাঁথুনি। মসজিদটির সামনে একটি ঈদগাহ ও পাশে আছে কবরস্থান।
মসজিদের পূর্ব দেয়ালে তিনটি প্রবেশপথ। পশ্চিম দিকে গম্বুজ থেকেও উঁচু মিম্বর। জনশ্রুতি আছে, অতীতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কয়েক দিনের খাবার নিয়ে পায়ে হেঁটে দূর-দূরান্ত থেকে এ মসজিদে অনেকেই নামাজ পড়ার জন্য আসতেন।