সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০২:১১:১৪

পশ্চিমারা ইসলামকে নিয়ে যেভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে

পশ্চিমারা ইসলামকে নিয়ে যেভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে

ইসলাম ডেস্ক: ইসলাম আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম। তাই পৃথিবীতে ইসলাম ধর্মকেউ শ্রেষ্ঠ ধর্ম বলা হয়। কিন্তু ইসলাম ধর্মের অনুসারি যারা অর্থ্যাৎ মুসলমানরা বর্তমানে ক্রমবর্ধমান হারে বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু মুসলমানেরা আসলেই কি অপরাধের মধ্যে জড়িয়ে পড়ছে? নাকি অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। চলুন জেনে নিই এ বিষয়ে ড. জাকের নায়েক কি বলছে।

পিসটিভি বাংলা ড. জাকের নায়েকের কাছে একজন দর্শক প্রশ্ন করেছিলেন, বর্তমান সময়ে মুসলমানেরা কি বেশি অপরাধ করছে?। উত্তরে জাকের নায়েক বলেন, ‘প্রথমত, ‘আসলে অপরাধি সব ধর্মেই থাকে। আর এই অপরাধিদের ভাল হওয়ার পথ দেখায় ইসলাম। অর্থ্যাৎ ইসলাম তাদের আলোর পথ দেখায়। কিন্তু বর্তমানে ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর জন্যেই আপনার মনে হচ্ছে অন্য ধর্মের মানুষের তুলনায় মুসলমানেরাই বেশি অপরাধ করছে। ইসলাম শ্রেষ্ঠতম ধর্ম এতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। কিন্তু প্রচার মাধ্যমগুলো সব পশ্চিমাদের হাতে, যারা ইসলামকে ভয় পায়। বিরামহীনভাবে ওদের প্রচার যন্ত্রগুলো ইসলামের বিরুদ্ধে প্রচার করে যাচ্ছে এবং ছেপে যাচ্ছে।

দ্বিতীয়ত, পৃথিবীর কোথাও কোনো বোমা ফাটলে কোনো তথ্য প্রমাণ ছাড়াই এর দায় মুসলমানদের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটাই হবে সংবাদের শিরোনাম। পরবর্তীতে যদি খুঁজে পাওয়া যায়, কোনো অমুসলিম এর জন্য দায়ী, তখন সে সংবাদটা আর উল্লেখ করার মতো খবরে স্থান পায় না।

তৃতীয়ত, পঞ্চাশ বছর বযসী কোনো মুসলিম যদি ১৫ বছরের এক যুবতীকে তার সম্মতিক্রমেও বিবাহ করে তা চলে আসবে পত্রিকার প্রথম পাতায়। অথচ পঞ্চাশ বছরের কোনো অমুসলিম যদি ছয় বছরের কোনো শিশুকে ধর্ষণও করে তাহলে সেটা হয়ে যাবে ভেতরের পাতার অনুল্লেখযোগ্য কোনো খবরের মতো। আমেরিকায় প্রতিদিন ২৭১৩ টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, কিন্তু প্রচার মাধ্যমের জন্য এটা আদৌ কোনো খবর নয়।

এটা আমাদের ভালো করেই জানা আছে, কিছু মুসলিম অসৎ, চরিত্রহীন, প্রতারক ইত্যাদি। কিন্তু প্রচার মাধ্যম তা এমনভাবে প্রচার করে যে, এ ধরনের কাজ শুধু মুসলমানরাই করে। অথচ সমাজের কলঙ্ক এমন উদাহরণ সব সমাজেই আছে।

মার্সিডিস কোম্পানির লেটেস্ট মডেলের একটি গাড়ি কিনেছেন আপনি, গাড়িটি পরীক্ষার জন্য একজন চালককে দায়িত্ব দিয়েছেন যে ভালো ড্রাইভিং জানে না। সে যদি ওটাকে নিয়ে দুম করে কোথাও লাগিয়ে দেয় তাহলে আপনি কাকে দোষ দেবেন, গাড়িটিকে না ড্রাইভারকে?
গাড়িটি সম্পর্কে জানার জন্য আপনার উচিৎ ছিল ওটার ক্যাটালগ ও ম্যানুয়েল নিয়ে একজন বিশেষজ্ঞের সামনে বসে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সব জেনে নেয়া। চলার ধরন, গতি, জ্বালানি খরচ, দুর্ঘটনা কবলিত হলে তা থেকে সুরক্ষার জন্য কি কি ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি। ড্রাইভারকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে গাড়ির মান যাচাই করা যায় না। টাকার জোরে অনেক কোটিপতির ছেলে বিশ্বসেরা কোম্পানির গাড়ি কিনে দু’দিনেই বারোটা বাজিয়ে ছেড়ে দেয়।
একইভাবে জন্মগতভাবে পাওয়া ইসলাম নিয়ে আজকের মুসলমানরা যা করছে তাতে তার বাহ্যিক অবয়ব দুমড়ে মুচড়ে এমন ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে যা দেখে নতুন কোনো ক্রেতা দু’পা এগোলে দশ পা পিছিয়ে যায়, একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কিন্তু একজন মানুষ হিসেবে যিনি জীবনের পথটা সুন্দরভাবে পাড়ি দিয়ে সঠিক গন্তব্যে নির্বিঘœ পৌঁছাতে চান তাকে তো সর্বোত্তম গাড়িটি খুঁজে বের করতেই হবে এবং গ্রহণ করতে হবে গাড়ি চেনার সঠিক পদ্ধতি, অর্থাৎ তার ম্যানুয়াল ও ক্যাটালগ ধরে বিশেষজ্ঞের কাছে থেকে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে।

খোদ সৃষ্টিকর্তা বিধাতা প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা রচিত মানব-জীবন ম্যানুয়েল, ‘আল কুরআন’ এবং তাঁরই নির্বাচিত শ্রেষ্টতম নমুনা-মানুষ মুহাম্মদ সা. নির্মিত ক্যাটালগ বিশুদ্ধ হাদিসসমূহ ইসলামকে চেনা ও জানার একমাত্র মাধ্যম।

ইসলামকে বিচার করতে হবে তার বাস্তবায়নকারী মুহাম্মাদ সা. এর মাধ্যমে। বিশ্ববরণ্য মুসলিম ঐতিহাসিকগণের পাশাপাশি কিছু অমুসলিম ঐতিহাসিক রয়েছেন যারা কোনো প্রভাবে প্রভাবিত না হয়ে নিতান্ত সততার সাথে সেবা করেছেন। তাদের মধ্যে অন্যতম মাইকেল এইচ হার্ট তার রচিত ‘দি হানড্রেড’ গ্রন্থে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম মানুষ হিসেবে এক নম্বর দিয়ে প্রথমেই যার নামটি লিখেছেন, তিনি মুহাম্মদ সা.। থমাস কার্লাইল এবং লা মর্টিন এর মতো ব্যক্তিত্বগণও তাদের রচনায় ইসলামের নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ সা. এর প্রতি প্রভুত সম্মান প্রদর্শন করেছেন। সূত্র : পিসটিভি বাংলা

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে