বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ, ২০২১, ১০:৫৮:৩৪

নির্ভুলভাবে টানা ১৭ ঘণ্টায় পুরো কুরআন শোনালেন হাফেজ শরীফ

নির্ভুলভাবে টানা ১৭ ঘণ্টায় পুরো কুরআন শোনালেন হাফেজ শরীফ

হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া মৌলভীবাজার জেলার নুরুল কুরআন মাদরাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। সম্প্রতি সে এক বৈঠকে বিনা লোকমায় পবিত্র কুরআনুল কারিমের পুরো ৩০ পারা তার উস্তাদকে শুনিয়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ! একটানা শুনানিতে সফলতার সঙ্গে নির্ভুলভাবে পুরো ৩০ পারা কুরআন শোনাতে সক্ষম হয়েছেন হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া। নির্ভুলভাবে এক বৈঠকে পুরো কুরআন শোনাতে পারা মহান আল্লাহর একান্ত অনুগ্রহ।

পুরো কুরআনুল কারিম তেলাওয়াতে তার সময় লেগেছে ১৭ ঘণ্টা। সে গড়ে ২৫ মিনিটে তেলাওয়াত করেছেন ১ পারা। একটানা তেলাওয়াতে তার কোনো ভুল হয়নি। শিক্ষক তাকে তার তেলাওয়াতে কোনো লোকমা দেননি। একটানা ১৭ ঘণ্টা কুরআন তেলাওয়াতের এ সময়ের মধ্যে শুধু নামাজ ও খাওয়ার সংক্ষিপ্ত বিরতির সময় ছাড়া কোনো বিরতিও নেওয়া হয়নি। হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া পুরো কুরআনুল কারিমের হদর তেলাওয়াত শুনিয়েছেন।

একটানা পুরো কুরআন শোনানো সম্পর্কে তার ওস্তাদ হাফেজ মাওলানা লোকমান আল-মাহমুদ জানান, ‘নামাজের সময় ও খাবারের সংক্ষিপ্ত বিরতি ছাড়া ফজরের পর থেকে টানা ১৭ ঘন্টায় পুরো কুরআনুল কারিম শুনিয়েছেন হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া। একটানা হদর তেলাওয়াত শুনেছি। গড়ে প্রতি পারায় ২৫ মিনিট সময় লেগেছে। তবে তাকে শর্ত দেয়া হয়েছিল- ‘একটানা খতমের উদ্দেশ্যে পড়া শুরু করলে তা শেষ হওয়ার আগে কুরআনুল কারিম দেখা যাবে না।’

তিনি আরও জানান, খতম শুরুর আগে হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়াকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, নির্ভুল শুনাতে পারবা তো? পূর্ণ আত্মবিশ্বাস ও সাহসের সাথে সে বলছিল ‘জ্বি ইনশাআল্লাহ’। আমি মনে মনে ধরে নিয়েছিলাম, প্রতি দশ পারায় একটা লোকমা ক্ষমাযোগ্য। তবে ত্রিশ পারায় তিনটির বেশি ভুল হলে এই খতম আর শোনা হবে না। নতুন করে আবার শুরু থেকে শোনাতে হবে।

অবিশ্বাস্য হলেও সত্য- হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া আমাকে অবাক বিস্মিত করে দিয়েছে। পুরো কুরআনুল কারিম নির্ভুলভাবে শুনিয়েছে। না কোনো শব্দ ভুল করেছে। না কোনো ইয়াদ ছুটে গেছে। নিঃসন্দেহে এটা আমার মহান রবের মহা অনুগ্রহ। সব প্রশংসা শুধু তারই। যিনি তাওফিক দিয়েছেন কুরআন পড়ার, কুরআন ছোঁয়ার, কুরআন মুখস্ত করার। প্রশংসার যত শব্দ; যত বাক্য সবই তোমার তরে হে কুরআন নাযিলকারী!

হাফেজ যাকরিয়ার শিক্ষক উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, যাকারিয়া আমার জীবনের প্রথম কোনো একজন ছাত্র; যে পূর্ণ কুরআনুল কারিম বিনা লোকমায় আমাকে শুনিয়েছে।

উল্লেখ্য, হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়া শর্ত মেনে পুরো কুরআন মুখস্থ শোনাতে সক্ষম হন। কুরআন শোনা শুরু করার আগে শিক্ষক লোকমানও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন যে, ‘তিনি তার ছাত্রের তেলাওয়াত মুখস্থ শুনবেন না বরং হারফান হারফান কুরআনুল কারিম দেখে দেখে তার পুরো তেলাওয়াত শুনবেন। সে লক্ষ্যে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন।

আল্লাহ তাআলা হাফেজ শরীফ আহমদ যাকারিয়াকে কুরআনের খাদেম হিসেবে কবুল করুন। দুনিয়া ও পরকালের নেয়ামতে ভরে উঠুক তার জীবন। আমিন। সূত্রঃ জাগো নিউজ২৪

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে