মসজিদ আল্লাহর ঘর। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচবার মসজিদে হাজির হওয়া প্রত্যেক মুসলমানে জন্য অবশ্যপালনীয় কর্তব্য। কেয়ামতের দিনে সাত শ্রেণীর মানুষকে আকাশের ছায়ার নিচে আশ্রয় দেয়া হবে। তাদের অন্যতম হলো যাদের অন্তর সবসময় মসজিদে পড়ে থাকে।
মুসলমানরা সবসময় চেষ্টা করেন তাদের মসজিদ যেন একটু ব্যতিক্রম ও আকর্ষণীয় হয়। এ জন্যই মসজিদ নির্মাণে সব শ্রেণীর মুসলমানরা সহযোগিতা করে থাকেন মুক্তহস্তে। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যে আমার জন্য মসজিদ নির্মাণ করে জান্নাতে তার জন্য আমি ঘর নির্মাণ করি।
পৃথিবীজুড়ে এখনো অসংখ্য প্রাচীন মসজিদ বিদ্যমান রয়েছে। শত শত বছর পরও যেসব মসজিদের নির্মাণশৈলী দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে। সম্প্রতি পাকিস্তানের করাচী শহরেও তেমনই অবাক করা একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। যা কাশতি নোমা মসজিদ বা নৌকা মসজিদ নামে প্রসিদ্ধ। সাধারণ মানুষের আর্থিক সহযোগিতায় তিনতলা বিশিষ্ট এই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হয়েছে সাত কোটিরও বেশি টাকা। যেখানে ৯০০ মুসুল্লি অনায়েসে একসাথে নামাজ পড়তে পারেন।
দূর থেকে দেখলে মনে হবে নদীর তীরে বড় একটি নৌকা দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গেলে দর্শকের ধারণা পালটে যাবে। করাচীর ওই নৌকা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ ইসহাক পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম উর্দু পয়েন্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নৌকা মসজিদের এ স্থানে দেড় শ’ বছরের পুরোনো নামাজ পড়ার অনুপযোগী একটি মসজিদ ছিল। ওইটি ভেঙে নতুন মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা করেও সম্ভব হচ্ছিল না। অজানা কারণে বারবার দেয়াল ভেঙে পড়ে যেত। তখন থেকে এই এলাকায় মানুষজন চলাফেরা করাই বন্ধ করে দেয়। একদিন আবদুল কাদের নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি স্বপ্নে দেখেন, নৌকার আদলে নির্মাণ করা হলে এ মসজিদ টেকসই হবে। দেয়াল ভেঙে পড়বে না। এরপরই টানা ১৪ বছর ধরে দৃষ্টিনন্দন এই নৌকা মসজিদ নির্মাণ করা হয়।
মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এই মসজিদ এখন দর্শনার্থীদের আগ্রহের জায়গায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসেন এটি দেখতে। তবে লাইতুল বরাত, লাইলাতুলকদরসহ বিশেষ দিনগুলোতে মুসুল্লিদের ভীড় বেশি থাকে।
পুরো পৃথিবীতে ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান ছাড়া এমন মসজিদ আর কোথাও নেই বলেও তিনি দাবি করেন।