জেরুজালেমের মসজিদে আকসায় পাঁচ দশক ধরে আসা-যাওয়া করছেন ফিলিস্তিনি নারী আল হাজাহ সারাহ। প্রতিদিন তিনি পায়ে হেঁটে আল আকসার আঙিনায় চলে আসেন। এ দীর্ঘ সময়ে নানা বাধাবিপত্তির মধ্যেও তিনি আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে দৃঢ়তার সঙ্গে অবস্থান করেছেন। চরম পরিস্থিতির মধ্যেও দুরাশায় আসা বন্ধ করেননি তিনি।
৯১ বছর বয়সী এ সাহসী নারী জানিয়েছেন যে নামাজ পড়তে প্রতিদিন তিনি আল আকসা মসজিদে আসেন। একদিনের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তখন আমার ২০ বছর বয়স। একদিন এক ইসরায়েলি সৈনিক আমাকে আল আকসা মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয়। তখন ওই সৈনিককে বললাম, ‘শুনো, আমি তোমার ও তোমার পরিবারের জন্মের আগ থেকেই আল আকসায় আসা-যাওয়া করছি। আমাকে কেমন করে বাধা দাও?’
বয়সের ভারে শারীরিকবাভে নুয়ে পড়লেও এ নারীর কথাবার্তা ও চলাচলে এর কোনো ছাপ নেই। গত অর্ধ শতাব্দি ধরে প্রতিদিন তিনি মসজিদে আকসায় আসা-যাওয়া করছেন। প্রতিদিন সকাল ৯টায় ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন। জোহর ও আসর নামাজ আকসা মসজিদে পড়েন। সারাদিন কাটিয়ে বিকেলে গাড়িযোগে বাড়ি ফেরেন তিনি। ইসরায়েলি সৈন্যদের দখলদারিত্বের মধ্যেও তিনি দীর্ঘ সময় অবস্থানের মাধ্যমে আল আকসা মসজিদ রক্ষায় ভূমিকা রাখছেন।
নিজ চোখে দেখা নির্মম দৃশ্যগুলো অবলীলায় বলে যান সারাহ। আল আকসার করুণ ইতিহাস উপস্থিত মুসল্লি ও দর্শকদের কাছে তুলে ধরেন কান্নাভরা কণ্ঠে। ১৯৩০ সালের মে মাসে জন্ম নেওয়া এ নারীর পাঁচ সন্তান। ৩৫ নাতি-নাতনিদের নিয়েই ৯১ বছর বয়সী এ নারীর জীবন। আল আকসা মসজিদের মুসল্লিদের নিজের চারপাশ দেখিয়ে বলেন, ‘এরা সবাই আমার সন্তান। সবাই আমার ভাই।’ তার পাশে থাকা তরুণরা তাকবির ধ্বনি দিয়ে তাঁকে সাধুবাদ জানান।
পূর্ব জেরুজালেমের রাস আল আমুদ এলাকায় বসবাস করেন সারাহ। দীর্ঘ জীবনের প্রতিদিন তিনি আল আকসা মসজিদে এসে নামাজ পড়েছেন। দীর্ঘ সময় অবস্থান করে নতুন প্রজন্মের কাছে মসজিদ সুরক্ষার ঐতিহ্য ধরে রাখছেন। সূত্র : আলজাজিরা নেট