ইসলাম ডেস্ক: চলার পথে মানুষ কখনো সুখের দেখা পায় আবার কখনো কখনো দুঃখ ঘিরে ফেলে তাকে। তবে সুখের সময় শুকরিয়া ও দুঃখের সময় আল্লাহ তায়ালার কাছে সাহায্য চাইতে বলা হয়েছে।
হাদিসে এসেছে, মুমিনের বিষয়টি বড় আশ্চর্য রকমের, বিপদে পড়লে এতে সে ধৈর্য ধরে আবার সুখে থাকলে আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করে। তবে উভয় অবস্থাই তার জন্য কল্যাণকর।- সহীহ মুসলিম, ২৯৯৯।
ধৈর্য দুই প্রকার। এক, গুনাহ থেকে নিজেকে বিরত রেখে ধৈর্য ধরা। এবং দুনিয়াবী বিভিন্ন ক্ষতির ওপর ধৈর্য ধরা। দুই, আল্লাহ তায়ালার বিধান পালন করতে গিয়ে যেই বাধা-বিপত্তি আসে তাতে ধৈর্য ধরা।
হজরত মুসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তায়ালার কাছে জানতে চাইলেন, হে আল্লাহ, আমি কিভাবে তোমার শুকরিয়া আদায় করব? -বলা হলো, আমাকে স্মরণ করো, ভুলে যেও না, আমার স্মরণ হলো শুকরিয়া আদায় এবং ভুলে যাওয়া হলো কুফর।
কোরআন, হাদিস ও বুজুর্গদের বাণীতে ধৈর্যের অনেক উপকারিতার কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
ধৈর্যশীলদের পুরস্কার বিষয়ে কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। ’ -সূরা বাকারা, ১৫৩।
কোরআনে আরো বলা হয়েছে, ‘অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করবো কিছুটা ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি ও ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। তবে সুসংবাদ দাও- সবরকারীদের। যখন তারা বিপদে পতিত হয়, তখন বলে, নিশ্চয় আমরা সবাই আল্লাহর জন্য এবং আমরা সবাই তারই সান্নিধ্যে ফিরে যাবো। তারা সে সমস্ত লোক, যাদের প্রতি আল্লাহর অফুরন্ত অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং এসব লোকই হেদায়াতপ্রাপ্ত। -সূরা বাকারা, ১৫৫
আল্লাহ মুমিনদের ধৈর্য ধারণের প্রতি উৎসাহিত করে বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা ধৈর্য ধরো ও ধৈর্যে অটল থাকো এবং পাহারায় নিয়োজিত থাকো। আর আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হও। ’ (সুরা : আলে ইমরান, ২০০)
বিপদ-আপদের সময় ধৈর্য ধারণ সম্পর্কে নিজের ছেলেকে উপদেশ দিয়েছেন হজরত লোকমান আ.। কোরআনে বলা হয়েছে- হে ছেলে! নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে, সৎকাজে আদেশ দেবে, মন্দকাজে নিষেধ করবে আর বিপদাপদে সবর করবে। নিশ্চয়ই এটা সাহসিকতার কাজ।’ (সুরা লোকমান, ১৭)
এছাড়াও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ধৈর্যকে সর্বোত্তম নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি ধৈর্যধারণ করে, আল্লাহ তাকে ধৈর্যশীলতা দান করেন। ধৈর্যের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোনো নিয়ামত কাউকে দেওয়া হয়নি। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৪৬৯)