ইসলাম ডেস্ক : বর্তমান সমাজে স্পষ্টভাবে বলার মতো যেই কয়টা অপরাধ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো অন্যের হক নষ্ট। অন্যকে ঠকিয়ে অনেকে নিজেকে লাভবান মনে করে। ভাবে অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করা সম্পদে সুখের প্রাসাদ তৈরি করবে। সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন কাটাবে।
অনেক সময় কেউ কেউ নিজের হক চাইতে গিয়ে আত্মসাৎকারীদের কাছে হয়রানীর শিকার হন। নানা ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। কোনো কোনো জায়গায় হতাহতের মতো ঘটনাও ঘটে। আত্মসাৎকারী একটু ভাবে না এই জঘন্য অপরাধটার কারণে পরকালে এর পরিণতি কী হবে।
অন্যের হক নষ্ট এমন একটি গুনাহ যা আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত ওই বান্দা তা মাফ না করবেন। ইসলামে বান্দার হককে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক হাদিসে নবিজি (স) বলেন, আল্লাহ তায়ালা শহিদের যাবতীয় অন্যায় মাফ করে দেন। কিন্তু ঋণ মাফ করবেন না। কেননা, এটা বান্দার হক।
হাকীমুল উম্মত হযরত থানবী (রাহ) বলেন, ‘নেক আমল অথবা তাওবা দ্বারা গোনাহ মাফ হয়ে যায়, তবে কারো হক মাফ হয় না। সুতরাং যথাসম্ভব বান্দার হক আদায় করতে হবে এবং সমস্ত হক আদায় করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা রাখতে হবে। তারপর যদি কিছু বাকি থেকে যায় এবং মৃত্যু এসে যায়, তখন আল্লাহ তায়ালার কাছে আশা করা যায় যে, তিনি তাকে দায়মুক্ত করে দেবেন, অর্থাৎ মাজলূমকে খুশী করে জালিমের মাগফিরাত করে দেবেন।’ (আনফাসে ঈসা, ১৯৮)
অন্যের হকের বিষয়ে আল্লাহ তায়ালা সতর্ক করে বলেছেন, ‘আর যারা অন্যায়ভাবে এতিমদের সম্পদ আত্মসাত্ করে তারা মূলত তাদের পেটে আগুন ঢোকাচ্ছে। অচিরেই তারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ -(সুরা নিসা : আয়াত ১০)
হজরত আয়েশা সিদ্দিকী (রা) সূত্রে বর্ণিত, মহানবি (স) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারো এক বিঘত পরিমাণ সম্পত্তি ভোগ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবর (স্তর) জমিন তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’ (বুখারি ২৪৫৩, মুসলিম ১৬১২)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) রাসুল (সা.) সম্পর্কে বর্ণনা করেন, ঋণগ্রস্ত মৃত ব্যক্তির লাশ (জানাজার জন্য) হাজির করা হলে রাসুল (সা.) জিজ্ঞেস করতেন, ‘সে কি অপরিশোধিত কোনো ঋণ রেখে গেছে? যদি বলা হতো, তিনি পরিশোধ করে গেছেন, তাহলে তিনি তার (জানাজা) নামাজ পড়াতেন। অন্যথায় বলতেন, তোমরা তোমাদের সাথীর জানাজা পড়ে নাও।’ (মুসলিম, ১২১৬)