শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬, ০২:০৫:১৫

গীবতকারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে যে ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করবে

গীবতকারীরা দুনিয়া ও আখেরাতে যে ভয়াবহ শাস্তি ভোগ করবে

ইসলাম ডেস্ক : ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। তাই ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে স্পষ্ট বিধান রয়েছে। মহাগ্রন্থ আল কোরআন ও হাদীসে সেই বিধানসমূহ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে মুসলমানদের করনীয় ও বর্জনীয় বিষয়গুলোর বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে। আজ আমরা গীবত ও গীবতকারীর পরিণতির বিষয়ে আলোকপাত করবো।

সমাজে বিভন্ন ধরণের ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টির পেছনে নিয়ামক ভুমিকা পালন করে থাকে গীবত। এটি এতটাই মারাত্মক যে সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি, দল ও সংগঠনের ঐক্যে ফাটল ধরায় এবং এর পেছনে নেতৃত্ব দেয় শয়তান। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন- পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ। (সূরা হুমাযাহ:০১)

কুরআন ও হাদিসে এই আচরণ সম্পর্কে বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

‘গীবত’ অর্থ বিনা প্রয়োজনে কোন ব্যক্তির দোষ অপরের নিকটে উল্লেখ করা। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) গীবতের পরিচয় দিয়ে বলেন- “গীবত হল তোমার ভাইয়ের এমন আচরণ বর্ণনা করা, যা সে খারাপ জানে”।

গীবতকারীর পরিণামঃ গীবত কবীরা গুনাহ্‌র অন্তর্ভুক্ত। গীবতের পাপ সুদের চেয়েও বড়; বরং হাদিসে গীবতকে বড় সুদ বলা হয়েছে (সহীহ আত্‌ তারগীব)। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ ‘তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে, তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করবে? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাকো’। (সূরা হুজুরাত:১২) অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, গীবত করা মৃত ব্যক্তির গোশত ভক্ষণ করার শামিল।

আব্দুল্লাহ্‌ ইবন মাসউদ (রা) বলেনঃ (একদা) আমরা নাবী কারীম (সা)-এর নিকটে ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন ব্যক্তি উঠে চলে গেল। তার প্রস্থানের পর একজন তার সমালোচনা করল। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) তাকে বললেনঃ তোমার দাঁত খিলাল কর। লোকটি বললঃ কি কারণে দাঁত খিলাল করব? আমিতো কোন গোশত ভক্ষণ করিনি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমি তোমার ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করেছ অর্থাৎ ‘গীবত’ করেছ।

একদা রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) দু’টি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি থমকে দাঁড়ালেন এবং বললেনঃ ‘এই দুই কবরবাসীকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে তাদেরকে তেমন বড় কোন অপরাধে শাস্তি দেওয়া হচ্ছেনা (যা পালন করা তাদের পক্ষে কষ্টকর ছিল)। এদের একজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে, চুগলখোরী করার কারণে এবং অন্যজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে পেশাবের ব্যাপারে অসতর্কতার কারনে। অপর হাদিসে চুগলখোরীর পরিবর্তে গীবত করার কথা উল্লেখ রয়েছে। আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সবাইকে গীবত ও এর কঠিন শাস্তি থেকে হেফাজত করুন। আমিন
০৫ জানুয়ারি ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে