ইসলাম ডেস্ক: সমাজে বিভন্ন ধরণের ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টির পেছনে নিয়ামক ভুমিকা পালন করে থাকে গীবত। এটি এতটাই মারাত্মক যে সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি, দল ও সংগঠনের ঐক্যে ফাটল ধরায় এবং এর পেছনে নেতৃত্ব দেয় শয়তান। আল্লাহ্ তা’আলা বলেন- পশ্চাতে ও সম্মুখে পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ। (সূরা হুমাযাহ:০১)
কুরআন ও হাদিসে এই আচরণ সম্পর্কে বিভিন্নভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
‘গীবত’ অর্থ বিনা প্রয়োজনে কোন ব্যক্তির দোষ অপরের নিকটে উল্লেখ করা। রাসূলুল্লাহ্ (সা) গীবতের পরিচয় দিয়ে বলেন- “গীবত হল তোমার ভাইয়ের এমন আচরণ বর্ণনা করা, যা সে খারাপ জানে”।
গীবতকারীর পরিণামঃ গীবত কবীরা গুনাহ্র অন্তর্ভুক্ত। গীবতের পাপ সুদের চেয়েও বড়; বরং হাদিসে গীবতকে বড় সুদ বলা হয়েছে (সহীহ আত্ তারগীব)।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা’আলা বলেনঃ ‘তোমাদের কেউ যেন কারো গীবত না করে, তোমাদের কেউ কি চায় যে, সে তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করবে? তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই করে থাকো’। (সূরা হুজুরাত: ১২) অত্র আয়াত প্রমাণ করে যে, গীবত করা মৃত ব্যক্তির গোশত ভক্ষণ করার শামিল।
এছাড়া হাদিসের এসেছে, ‘তোমরা গিবত বা পরনিন্দা করা থেকে দূরে থাকবে। কারণ তাতে রয়েছে তিনটি ক্ষতি-
প্রথমত- গিবতকারীর দোয়া কবুল হয় না।
দ্বিতীয়ত- গিবতকারীর কোনো নেক আমল কবুল হয় না এবং
তৃতীয়ত- আমলনামায় তার পাপ বৃদ্ধি হতে থাকে। (বুখারি)
আব্দুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রা) বলেন: (একদা) আমরা নাবী কারীম (সা)-এর নিকটে ছিলাম। এমতাবস্থায় একজন ব্যক্তি উঠে চলে গেল। তার প্রস্থানের পর একজন তার সমালোচনা করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ (সা) তাকে বললেনঃ তোমার দাঁত খিলাল কর। লোকটি বললঃ কি কারণে দাঁত খিলাল করব? আমিতো কোন গোশত ভক্ষণ করিনি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমি তোমার ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করেছ অর্থাৎ ‘গীবত’ করেছ।
সুতরাং গীবত এতোটাই ছোট্ট ভুল যে আপনি ইচ্ছে করলেই এটা থেকে বিরত থাকতে পারেন। কিন্তু এটা যদি আপনি না মানেন তাহলে এর চেয়ে আর বড় ভুল বা পাপ পৃথিবীতে আর নাই।
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/জেএম/আরএম