ইসলাম ডেস্ক : নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে।
আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭)
আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক।
সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি।
একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে।
ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
ইসলাম হাউজ ডটকম থেকে
মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর