মুফতি আবদুল্লাহ তামিম : চড়ুই প্যাসারিডি পরিবারের অন্তর্গত একটি পাখি। পৃথিবীর অ্যান্টার্কটিকা বাদে সব মহাদেশেই এ পাখিটি কমবেশি দেখা যায়। সারা পৃথিবীতে এক বিশাল এলাকা জুড়ে এরা বিস্তৃত, প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এদের আবাস। বর্তমানে আগের তুলনায় খুবই কম দেখা যায় এ পাখিদের।
চড়ুই পাখি খাওয়া হালাল। এটাতে নিষিদ্ধ কিছু না পাওয়া যাওয়ায় এটা হারাম না। হারাম বস্তুর বিষয়ে কোরআনুল কারিমে আল্লাহ বলেন, ‘তিনি তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, প্রবাহিত রক্ত, শূকরের গোশত এবং ওই সব প্রাণী, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবাই করা হয়। (সুরা বাকারা ১৭২, ১৭৩)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, আপনি বলে দিন, আমার প্রতি যে ওহি হয়েছে তাতে, লোকে যা খায় তার মধ্যে আমি কিছুই হারাম পাই না। মৃত, বহমান রক্ত ও শুকরের মাংস ছাড়া। কেননা এগুলো অবশ্যই অপবিত্র অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য উৎসর্গের কারণে। তবে যে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে নিরুপায় হয়ে তা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে, তবে নিশ্চয় আপনার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা আন-আম ১৪৫)
পরবর্তীতে হাদিসের মাধ্যমে আরও কিছু প্রাণী ও পাখি হারাম করা হয়। যেমন, প্রতিটি থাবা দিয়ে আক্রমণকারী পাখী ও দাঁত দিয়ে আক্রমণকারী প্রাণী, কুকুর ও গৃহপালিত গাধা। সেগুলো সম্পর্কে হাদিসে এসেছে।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতিটি থাবা দিয়ে আক্রমণকারী পাখি ও দাঁত দিয়ে আক্রমণকারী হিংস্র প্রাণী খেতে নিষেধ করেছেন। (মুসলিম ১৯৩৪) অতএব হাঁস, মুরগী, তিতির, হুদহুদ, রাজহাঁস, বক, সারস, চড়ুই, কোয়েল, ঘুঘু, কবুতর ইত্যাদি পাখি প্রজাতির প্রাণী ভক্ষণ করায় কোন বাধা নেই। কেননা এগুলি নখ দিয়ে শিকার করে না। পক্ষান্তরে যেসব শিকারী পাখি থাবা বা নখর দিয়ে শিকার করে সেসব পাখি। যেমন, ঈগল, চিল, শকুন, কাক, পেঁচা, বাজ পাখি ইত্যাদির গোশত ও ডিম খাওয়া নিষিদ্ধ তথা হারাম।
মুসলিমদের জন্য বেশিরভাগ পাখি খাওয়া জায়েজ হলেও বিনা কারণে পাখি শিকার ইসলাম নিরুৎসাহিত করে। নির্ভরযোগ্য কারণ ছাড়া এদের নিশানা বানানো জায়েজ নেই। তাছাড়া দেশীয় আইনেও এটি নিষিদ্ধ।
আল্লাহর রসুল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে, হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (নাসায়ি শরিফ ৪৩৪৯)
এটা একটা উদাহরণ দেওয়া হয়েছে। চড়ুই ছোট পাখি। কোনও প্রাণী বা পাখিকে অযথা হত্যা করা জায়েজ নেই। খাওয়ার জন্য হলে জায়েজ। অন্যায়ভাবে অযথা হত্যা করা জায়েজ নেই।