রবিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৪, ১০:০৩:৩০

মহানবী (সা.)-এর দৃষ্টিতে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে, জানেন?

মহানবী (সা.)-এর দৃষ্টিতে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে, জানেন?

মাইমুনা আক্তার : আল্লাহভীতি ও ইবাদতপ্রীতি মানুষকে ইহকাল-পরকালের প্রশান্তি দান করে। এই অভ্যাসগুলো মুমিনকে উভয় জাহানের কল্যাণ অর্জনে সহায়তা করে। যার অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে সে কোনো পাপে লিপ্ত হতে পারে না, পাশাপাশি আল্লাহর মহব্বত তাকে ইবাদতে উদ্বুদ্ধ করে। পরকালকে প্রাধান্য দিতে সহায়তা করে।

আর যারা আল্লাহকে ভয় করে, পরকালকে প্রাধান্য দেয়, মহান আল্লাহ তাদের দুনিয়া-আখিরাত সুখের ও উপভোগ্য করে দেন। 

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই যারা তাদের প্রতিপালকের ভয়ে ভীতসন্ত্রস্ত, আর যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহে ঈমান আনে। যারা তাদের প্রতিপালকের সঙ্গে শরিক করে না, যারা তাদের দানের বস্তু দান করে আর তাদের অন্তর ভীত শঙ্কিত থাকে এ জন্য যে তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের কাছে ফিরে যেতে হবে। তারাই কল্যাণসমূহের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এবং তাতে তারা অগ্রগামী। (সুরা ; মুমিনুন, আয়াত : ৫৭-৬১)

মানুষ এই পৃথিবীতে মুসাফিরের মতো, প্রতিটি মানুষকেই সময় ফুরিয়ে গেলে তার রবের কাছে ফিরে যেতে হবে। মৃত্যু-পরবর্তী সেই জীবনকে সাজাতে যারা সদা তৎপর তারাই মূলত বুদ্ধিমান। কারণ এই দুনিয়ার জীবন পরীক্ষা মাত্র।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর দুনিয়ার জীবন তো খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের জন্য পরকালের আবাসই উত্তম। অতএব তোমরা কি অনুধাবন করো না?’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৩২)

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.) -এর সঙ্গে ছিলাম। এ অবস্থায় এক আনসারী নবী (সা.)-এর কাছে এসে তাঁকে সালাম দিল। 

অতঃপর বলল, হে আল্লাহর রাসুল! মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা উত্তম কে? তিনি বলেন, স্বভাব-চরিত্রে তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অধিক উত্তম। 

সে পুনরায় জিজ্ঞেস করল, মুমিনদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান কে? তিনি বলেন, তাদের মধ্যে যারা মৃত্যুকে অধিক স্মরণ করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য উত্তমরূপে প্রস্তুতি গ্রহণ করে, তারাই সর্বাধিক বুদ্ধিমান। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪২৫৯)

এর বিপরীতে যারা দুনিয়াকে প্রাধান্য দেবে এবং আখিরাতকে অবহেলা করবে, তাদের মতো বোকা আর কেউ নেই। কারণ তাদের জন্য দুনিয়াতেও প্রকৃত শান্তি ও সফলতা নেই, আখিরাতেও নেই। 

হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘পার্থিব চিন্তা যাকে মোহগ্রস্ত করবে, আল্লাহ তার কাজকর্মে অস্থিরতা সৃষ্টি করবেন, দরিদ্রতা তার নিত্যসঙ্গী হবে এবং পার্থিব স্বার্থ ততটুকুই লাভ করতে পারবে, যতটুকু তার তকদিরে লিপিবদ্ধ আছে। 

আর যার উদ্দেশ্য হবে পরকাল, আল্লাহ তার সব কিছু সুষ্ঠু করে দেবেন, তার অন্তরকে ঐশ্বর্যমণ্ডিত করবেন এবং দুনিয়া স্বয়ং তার সামনে এসে হাজির হবে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৪১০৫)

মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে পরকালীন সফলতার পথে হাঁটার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে