ইসলাম ডেস্ক : রোজা একটি ফরজ ইবাদত। ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন সুস্থ ব্যক্তির উপর রোজা রাখা ফরজ। শারীরিকভাবে রোজা পালনে সক্ষম ব্যক্তির জন্যই রোজা রাখা আবশ্যক।
নাপাক অবস্থায় সাহরি খেয়ে রোজা রাখা যাবে? এমন প্রশ্ন অনেকে করেন। যার ওপর গোসল ফরজ তিনি গোসল না করে খাওয়া-দাওয়া করতে কোনো নিষেধ নেই। তবে কুলি করে, উভয় হাত ধুয়ে খাবার গ্রহণ করা উত্তম। গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও গোসল না করেই সাহরি খেয়ে রোজা রাখলে রোজা সঠিক হয়ে যাবে।
তবে মনে রাখতে হবে ফজরের ওয়াক্ত থাকতেই গোসল করে সময় মতো নামাজ আদায় করতে হবে। রোজা যেমন ফরজ বিধান, ঠিক তেমনই নামাজও ফরজ বিধান। সব সময়ই মনে রাখতে হবে, গোসল ফরজ হওয়া সত্ত্বেও বিনা ওজরে গোসল না করে অপবিত্র অবস্থায় এক ওয়াক্ত নামাজের সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়া কবিরা গুনাহ।
কবিরা গুনাহ অর্থাৎ বড় গুনাহ। একটি গুনাহই জাহান্নামে পৌঁছে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। তবে আল্লাহ যদি ক্ষমা করেন। (মুসলিম ২৫৯২, বাদায়েউস সানায়ে ১/১৫১)
হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমজান মাসে স্বপ্নদোষ ব্যতীতই অপবিত্র অবস্থায় রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন। এরপর তিনি গোসল করে নিতেন। ফজর নামাজ পড়তেন। এভাবে রোজা রাখতেন। (বোখারি ১৮২৯, মুসলিম ১১০৯)
রাসুলের অপর স্ত্রী উম্মুল মোমিনীন উম্মে সালামা রা. বর্ণনা করেন, সহবাসের ফলে নাপাকি অবস্থায় রসুল সুবহে সাদিক অতিক্রম করতেন, এরপর গোসল করে রোজা রাখতেন। (বোখারি ১৯২৬)
একইভাবে হায়েজ ও নেফাসগ্রস্ত নারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। ফজর হওয়ার পূর্বেই যদি তারা পবিত্র হয়ে যায়, তবে গোসল না করেই রোজার নিয়ত করে নিবে। হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যখন তোমরা (রমজানের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা রাখবে আর যখন (শাওয়ালের) চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা বন্ধ করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশ দিন রোজা রাখবে। (বুখারি ১৯০৯, মুসলিম ১০৮০)
আল্লাহ তাআলা বলেন, রোজার প্রতিদান আমি নিজেই দেবো, কেননা তা একমাত্র আমার জন্য। আমি নিজেই এর বিনিময় প্রদান করব। বান্দা একমাত্র আমার জন্য নিজের প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। পানাহার পরিত্যাগ করেছে। (মুসলিম ১১৫১, মুসনাদে আহমদ ৯৭১৪, সুনানে ইবনে মাজাহ ১৬৩৮)