জামালপুর: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলায় বেগুনের কেজি মাত্র দুই-তিন টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবাদের খরচ না উঠায় বেগুন চাষিরা বেকায়দায় পড়েছেন। অনেকে বেগুন ক্ষেতে রেখে দিচ্ছেন গো-খাদ্য হিসেবে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদফতর সূত্র জানায়, দেওয়ানগঞ্জের ৮ ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৭ হাজার বেগুন চাষি রয়েছেন। ৩৫০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে উৎপাদন হয় ৩০-৩২ মেট্রিক টন। প্রতি বিঘায় খরচ হয় ১৫-১৮ হাজার টাকা। ১০ টাকা কেজি দরে ৬০-৭০ হাজার টাকা হওয়ার কথা।
দেওয়ানগঞ্জ পৌর হাটে বেগুন বিক্রি করতে আসা চাষি আক্কাস মিয়া, আব্দুল কদ্দুস, সুলতান মিয়া, বারেক সরকার ও সুরুজ আলী বলেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারিনি। লাভ দূরের কথা, হাটে বেগুন নিয়ে আসার রিকশা ভাড়াও উঠে না।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, অনুকূল আবহাওয়ার জন্য ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলে কৃষকরা বেগুন চাষ করেন। চলতি মৌসুমে ইসলামপুরে ৬০ হাজার মেট্রিক টন বেগুন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রায় ৪ হাজার একর জমিতে বেগুন চাষ করা হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে দেড় হাজার একর বেশি।
ইসলামপুরের ডিক্রির চরের চাষি আক্রাম হোসেন, সুজা মিয়া, বেলাল হোসেন ও কাদের আলী বলেন, এবার বেগুনের ফলন ভাল। ফলন বেশি হওয়ায় বাজারে দাম পড়ে গেছে। কিন্তু এর ফলে বেগুন আবাদের খরচ উঠছে না। ক্ষেতের বেগুন ক্ষেতেই রেখেছি।
দেওয়ানগঞ্জ উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর কারণে চাষীরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। এলাকায় বেগুন সংরক্ষণের জন্য কোনও হিমাগার না থাকায় এসব বেগুন সংরক্ষণেরও সুযোগ নেই।
ইসলামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন জানান, উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের মাটি বেগুন চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় বেগুনের ফলন অত্যন্ত বেশি হয়েছে। এতে বেগুনের চাহিদা না থাকায় কৃষকরা বেগুন চাষের খরচ তুলতে পারছে না।