এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলায় চিরকুট লিখে মেহেদী হাসান আপন নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) রাত ৯টার দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া এলাকায় শিক্ষার্থীর নিজ ঘরে এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মেহেদী হাসান আপন উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া গ্রামের ইটভাটার শ্রমিক শিপন মিয়ার ছেলে ও বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। মৃত্যুর আগে সে দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে গেছে।
চিরকুটে লেখা রয়েছে, শুরুতেই বলি সালাম নিবেন। আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি, আমি আপনাদের অনেক ক্ষতি করেছি, আপনাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। আমি ছোট থেকেই অনেক খারাপ, নিজেকে কখনও ভালো করতে পারি নাই। বাবার কথা রাখতে পারি নাই, বাবার মনে অনেক কষ্ট দিয়েছি।
বাবা আপনার পা দুটি ধরে মাফ চাইতে পারলাম না। আপনি আমাকে মাফ করে দিয়েন। আর মা তুমি আমার জন্য অনেক কষ্ট করছো, আমাকে অনেক বুঝাতে কিন্তু ভালো হতে পারলাম না। আর দাদার কথা কি বলব, সে তো আমার জন্য নিজের সম্মানটুকুও হারিয়েছে।
আমার জন্য অনেক কিছু করেছে। কিন্তু আমি কেন ভালো হতে পারলাম না। আচ্ছা আমি সবার মনে কষ্ট দিয়েছি আপনারা আমাকে মাফ করে দিয়েন। বন্ধু তোদের সঙ্গে কত আড্ডা দিতাম, কত মজা করতাম, তোরা আমার কথায় কিছু মনে করিস না। আমার কবরে মাটি দিতে আসিস।
আমার কাছে কেউ টাকা পেয়ে থাকলে আমাকে মাফ করে দিয়েন। আমি ভালো হতে পারলাম না। তাই নিজেই দুনিয়া থেকে চলে গেলাম। আপনারা ভালো থাকেন। আপনাদের খারাপ সন্তান আর নেই। বন্ধু তোরা কিন্তু আসিস আমার জানাজায়। ইতি- আপনাদের খারাপ ছেলে আপন।
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট বোন আছিয়া জানায়, বাবা ইটভাটায় আর মা সুতার মেলে কাজ করেন। আপন রাতে ভাত খেয়ে তাকে দাদার ঘরে পাঠিয়ে দেন। এরপর দরজা বন্ধ করে একাই তার রুমে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর মা কাজে থেকে বাড়িতে এসে আপনকে ডাকাডাকি করতে থাকে। কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে গেলে আপনকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কাছেই ওই চিঠিটি ছিল। কান্নাকাটি শুরু করলে লোকজন এসে পুলিশে খবর দেয়।
এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী থানার এসআই রাশেদ মিয়া বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সহায়তায় ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে পুলিশ।