মঙ্গলবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৬, ০৬:৩৭:১১

টুঙ্গিপাড়ায় অশ্রুসিক্ত দুই বোন

টুঙ্গিপাড়ায় অশ্রুসিক্ত দুই বোন

নিউজ ডেস্ক : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে গতকাল সোমবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা। শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের পর সেখানে কিছুক্ষণ অশ্রুসিক্ত নয়নে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী।

সকালে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পর হেলিকপ্টারে করে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে পৌঁছে সকাল ১০টা ১০ মিনিটে প্রথমে সরকারপ্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা। পরে সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল সামরিক অভিবাদন জানায়।

এ সময় বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এরপর ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ফাতেহা পাঠ এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।

এরপর শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে দলের সভানেত্রী হিসেবে আবার বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও কাজী জাফর উল্যাহ, দলের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বি এম মোজাম্মেল, মুহম্মদ ফারুক খান এমপি, শেখ হেলালউদ্দিন এমপি, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা হোসেন পুতুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল আবু এসরার, পুলিশের আইজি এ কে এম শহীদুল হক, র‌্যাবের ডিজি বেনজীর আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা পরে সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে আয়োজিত মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেন। বঙ্গবন্ধু ভবনে অবস্থান করে এ মিলাদে শরিক হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করলে সমাধি প্রাঙ্গণ সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়।

পরে কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে সমাধিসৌধের বেদি।

বঙ্গবন্ধুর সমাধি প্রাঙ্গণে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সরকার কিংবা দলের একার সম্পত্তি নন, তিনি সর্বজনীন। দেশের ১৬ কোটি মানুষের মণিকোঠায় তার স্থান। তার মতো একজন নেতা আগামীতে আর এ দেশে জন্ম নেবে না।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে তার নাম মুছে ফেলার চেষ্টা চালানো হয়েছিল; কিন্তু বঙ্গবন্ধু ধীরে ধীরে আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। সব জায়গাতেই কিছু কুলাঙ্গার তো থাকেই। তারা ছাড়া দেশের সব মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ।’

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ার কাজ এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আজ সমাপ্ত হওয়ার পথে। উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’ তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দুটি স্বপ্ন দেখেছিলেন—একটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আরেকটি বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়া। প্রথমটি তিনি সফলতার সঙ্গে করে গেছেন। সেই দিন বেশি দূরে নয়, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এই বাংলার মাটিতে প্রতিষ্ঠিত হবে।’ -কালেরকণ্ঠ

১৬ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে