বুধবার, ১৭ আগস্ট, ২০১৬, ০৩:৫৮:০১

এসপি বাবুল স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি : দাবি শ্বশুরের

এসপি বাবুল স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেননি : দাবি শ্বশুরের

বিশেষ প্রতিনিধি : আলোচিত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার স্বেচ্ছায় পদত্যাগপত্র জমা দেননি বলে দাবি করেছেন তার শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। গতকাল মঙ্গলবার তিনি অভিযোগ করেন, বাবুল চাইলেও তাকে কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয়নি।

এদিকে বাবুলের পদত্যাগপত্র নিয়ে এত দিন পুলিশের পক্ষ থেকে রাখঢাক করা হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল খান বলেছেন, বাবুল আক্তারের পদত্যাগপত্র এসেছে। এর আইনগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিয়ম অনুসারে যা যা করার দরকার, করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে জানতে বাবুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, বাবুল পদত্যাগ করেছেন বলে যা বলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। বাবুল চাকরি ছাড়তে চাননি। তিনি বলেন, পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা কীভাবে, কোথায় বসে, কার মাধ্যমে পদত্যাগপত্র দিচ্ছেন, সেটা একটা বড় ব্যাপার।

জিজ্ঞাসাবাদের নামে বাবুলকে নেওয়া হয়েছিল ২৪ জুন রাতে। ওই দিন তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে সই নেওয়া হয়। সেটা ছিল শুক্রবার। মোশাররফ হোসেনের প্রশ্ন, ছুটির দিনে একজন কর্মকর্তা কী করে পদত্যাগ করবেন? তিনি বলেন, বাবুল যদি পদত্যাগ করেন, তাহলে এত দিন সেটা কোথায় ছিল? কারণ, পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছিল, বাবুল চাকরিতেই আছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, গত ৫ জুন স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের পর ৩ আগস্ট বাবুল আক্তার তার কর্মস্থল পুলিশ সদর দপ্তরে গিয়ে লিখিতভাবে কাজে যোগ দিতে চান। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাকে জানিয়ে দেন, তাকে আর কাজে যোগদান করতে দেওয়া সম্ভব নয়। পরদিন ৪ আগস্ট বাবুল লিখিতভাবে যোগদানপত্র জমা দেন।

এতে তিনি বলেন, স্ত্রী খুন হওয়ার পর দুই সন্তানের দেখাশোনার জন্য কর্মকর্তাদের পরামর্শমতো তিনি শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে দুই সন্তানকে নিয়মিত চিকিৎসকের কাছেও নেওয়া হচ্ছে। অনুপস্থিতির সময়টা ছুটি হিসেবে নিয়ে তাকে যোগ দেওয়ার সুযোগ চান বাবুল। পুলিশ সদর দপ্তরে এই আবেদনের ব্যাপারে দায়িত্বশীল কোনো কর্মকর্তা কোনো মতামত দেননি বলে জানা গেছে।

বাবুলের শ্বশুর বলেন, চাকরি চলে গেলে বাবুল নিরাপত্তাহীন হয়ে যাবেন। তিনি বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর আক্রোশের শিকার হতে পারেন।
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বদলি হয়ে আসার দুই দিন পর গত ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের ও আর নিজাম রোডে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম। এ ঘটনায় বাবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন।

শুরুতে জঙ্গিদের সন্দেহ করা হয়েছিল। কিন্তু পরে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পুলিশের ধারণা পাল্টে যায়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে গত ২৪ জুন গভীর রাতে খিলগাঁও ভূঁইয়াপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুলকে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আবার তাকে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়।

ওই জিজ্ঞাসাবাদের সময় পদত্যাগপত্রে সই করেন বাবুল। বেশ কিছুদিন সেই পদত্যাগপত্র পুলিশ সদর দপ্তরে থাকার পর কিছুদিন আগে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। - প্রথম আলো
১৭ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে