শনিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:৫২:৩৬

৩ কারণে দুই টাকার নোট পাচার

 ৩ কারণে দুই টাকার নোট পাচার

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ থেকে দুই টাকার নোট পাচারের অভিনব পদ্ধতিতে চেষ্টা করেছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র।  তবে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা।  

পরীক্ষামূলক পাচার, সিকিউরিটি সুতা বের করে বড় নোট তৈরির পরিকল্পনা ও দেশের বাইরে বাংলাদেশি টাকার বাজার ধরা; এ ৩ কারণে পাচার হচ্ছে দুই টাকার নোট বলে শুল্ক গোয়েন্দাদের তদন্তে ওঠে এসেছে।  পাচারকারী, প্রেরক ও প্রাপকের ঠিকানাও দিচ্ছেন ভুয়া কিংবা সাংকেতিক কোনো ঠিকানা।  

অন্য কেউ এমন কৌশল বুঝতে না পারলেও ঠিকই সফলভাবে পাচার করা সম্ভব বলে তদন্তে জানা গেছে।

গত বৃহস্পতিবার চীনে পাচারের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি পোস্টাল পার্সেলে দুই টাকার নোট ২৮টি প্যাকেটে ৫৬ হাজার টাকা জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

‘হেলথ কেয়ার সার্ভিস’ বই হিসেবে পাচারের চেষ্টা হয়েছিল নোটগুলো।  স্ক্যানিংয়ের সময় সন্দেহ হয় শুল্ক গোয়েন্দা কর্তৃপক্ষের। পরে খুলে দেখা যায়, সাদা বইয়ের আড়ালে চকচকে দুই টাকার নোট!

দুই টাকার মুদ্রাপাচারের বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান গণমাধ্যমকে বলেন, শাহজালালে দুই টাকার ২৮ হাজার পিস নোট পাচারের চেষ্টার নেপথ্যে ৩টি কারণ উঠে এসেছে।

প্রথমত. ধারণা করা হচ্ছে পরীক্ষামূলকভাবে দুই টাকার নোট পাচার করা হচ্ছে।  সফল হলে বড় কোনো চালান নেয়া হতে পারে পরে।

দ্বিতীয়ত. দুই টাকার চকচকে নোটের সিকিউরিটি সুতা সংগ্রহ করে বড় নোট বানিয়ে আবার দেশে আনা হতে পারে জাল টাকা, যা বাজারে ছড়িয়ে বড় ধরনের জালিয়াতির ছক কষতে পারে সংঘবদ্ধ চক্রটি।

তৃতীয়ত. নেহায়েত শখের চাহিদা মেটাতে বিক্রির উদ্দেশ্যে নেয়া হতে পারে।  বাংলাদেশি মুদ্রা সংগ্রহে রাখার একটা বাজারও রয়েছে দেশের বাইরে।

ড. মইনুল খান বলেন, দুই টাকার নোট পাচারকারী প্রেরক ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেছেন।  এটি জানার চেষ্টা চলছে।  প্রেরক মেডিকেল বই হিসেবে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে- প্রেরক স্বনামধন্য চিকিৎসক, থাকেন বিদেশে ব্যবহার করা হয়েছে।  

উল্লেখ্য, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফরেন পোস্ট অফিসের মুদ্রা পাচারের সংবাদে দুটি পার্সেল নজরদারিতে পড়েশুল্ক গোয়েন্দাদের।  স্ক্যানিং মেশিনে সাদা বই দেখা যায়। কার্টনের গায়ে ‘হেলথ কেয়ার সার্ভিস’ লেখা আর প্রেরক ডা. রেদওয়ান।

কার্টনে লেখা ঠিকানা অনুযায়ী রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ডা. রেদওয়ান আল করিম ভূঁইয়া (১৪/৩, বি, উত্তর-পূর্ব যাত্রাবাড়ী, দ্বিতীয় তলা, ঢাকা-১২০৪) হংকং ও বেইজিংয়ে এটি পাঠাচ্ছিলেন।

প্রথম কার্টনের ওপর হংকংয়ের বাও রুই নামের একজন ও দ্বিতীয় কার্টনে শেইফেং জিন, বেইজিং, চীন নামে আরেকজন প্রাপকের ঠিকানা লেখা রয়েছে।

কার্টন খোলার পর বই আকৃতির প্যাকেট দেখা যায়। স্ক্যানিংয়ে যাতে ধরা না পড়ে সেজন্য উপরে ও নিচে দেয়া হয়েছিল কার্বন কাগজ।  প্যাকেটের ওজন অনুযায়ী লাগানো হয় ৭৫৮ টাকার ডাকটিকিট।

হংকংয়ের ঠিকানায় ২৪টি প্যাকেটে ২৪ হাজার ও চীনের ঠিকানায় চারটি প্যাকেটে ৪ হাজার দুই টাকার নোট ছিল।
২০আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে