সোমবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৬, ০১:৫৯:২৩

‌আর কতো প্রতিবাদে নিরাপদ হবে বাংলাদেশ!

‌আর কতো প্রতিবাদে নিরাপদ হবে বাংলাদেশ!

নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যার প্রতিবাদে ফুসে উঠছে ফেসবুক। ইভেন্ট থেকে শুরু করে স্ট্যাটাস। রিশা হত্যার প্রধান আসামি ওবায়দুলকে ধরিয়ে দিতে ছবি, আর রিশার জন্য ন্যয়বিচার চেয়ে নানা পোস্টে ছেয়ে গেছে। একই সাথে শঙ্কাও জানিয়েছেন অনেকে- কুমিল্লার তনু, ঠাকুরগাঁওয়ের আফসারা হত্যার বিচার চেয়ে প্রতিবাদের স্বর হারিয়ে যেতে সময় লাগেনি বেশি। রিশার জন্য তার সহপাঠীরা উদ্যোগী হয়ে যে আন্দোলন গড়ে তুলেছে, তা যেন সফল হয়। তার জন্য সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ চান তারা। আর রিশার বন্ধুরা প্রশ্ন করে লিখেছে, ‘আর কতো প্রতিবাদে নিরাপদ হবে বাংলাদেশ?’

রিশা গত বুধবার দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় মারা যায় রিশা। এরপর থেকেই তার সহপাঠী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা নেমে আসে রাস্তায়। রিশার জন্য ন্যয়বিচারের দাবি জানিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

জাস্টিস ফর রিশা ইভেন্টের বিবরণীতে লেখা, ‘৮ম শ্রেণির ছাত্রী রিশাকে (১৪) ফুট ওভার ব্রিজের ওপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল এবং যারা তার হত্যার জন্য দায়ী তাদের বিচারের দাবিতে আমাদের এই ইভেন্টটি। রিশা হত্যার বিচার চাই। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়বো। আর একটি ভাই-বোনকেও যেন এমন সন্ত্রাসী হামলার শিকার না হতে হয়।’

শরীফ আহমেদ লিখেছেন, ‘২৪ ঘন্টার মধ্যে অপরাধীকে ধরার ঘোষণা দিয়েছে পুলিশ। আবার যেন তনুর মতো না হয়। অপরাধী যেন কঠিন থেকে কঠিনতম শাস্তি পায়। উই ওয়ান্ট জাস্টিস।’

মিরু পাটোয়ারি লিখেছেন, ‘আমি ন্যায় চাই, বিচার চাই। রিশার জন্য, ওর বাবা মায়ের জন্য, ওর সহপাঠীদের জন্য, আমাদের জন্য! এই রকম এক একটা ঘটনা আমাদের মধ্যে যে ক্ষত করে যায়, তার ওপর এক বিন্দু প্রলেপ পড়ার জন্য! আমি আবেদন করি ওই বাবা মায়ের কাছে, যারা ওই পশুকে জন্ম দিয়েছেন,তারা যেন ওকে ধরিয়ে দেয়, সত্যিকারের বাবা মা’র মতো কাজ করেন।’

আব্দুল কুদ্দুস লিখেছেন, ‘অনেক হয়েছে আর না..!!  কুলাঙ্গার খুনির বিচার চাই....।’ জাস্টিস ফর রিশা ইভেন্ট পেজে মোবারক হোসেন বলেন, ‘দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। যাতে এমন কাজ করার মতো সাহস আর কেউ  না পায়।’

সৈয়দ আশিক ইসলাম লিখেছেন, ‘৫ দিনেও রিশার খুনি ওবায়দুলকে নাকি পুলিশ খুঁজে পাচ্ছে না। আমরা কি দায়িত্ব নিতে পারিনা, এই হায়েনাকে খুঁজে বের করার? হায়েনার এই ছবিটা দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে দিন। এই অমানুষকে যেখানেই পাবেন, পুলিশে সোপর্দ করুন।’

শঙ্কা জানিয়ে একজন লিখেছেন, ‘আমি তনু। আমাকে হত্যা করা হয়েছে। আমার খুনিদের ধরার জন্য অনেক মানুষ আন্দোলন করছিল। ...আমি মিতু। আমাকে খুন করা হয়েছিল। মানুষ আবার প্রতিবাদে নামে যে আমার খুনিদের ধরতে হবে...আমি রিশা... আমাকে হত্যা করা হয়। সবাই জানে আমাকে কে হত্যা করেছে। আমার খুনিকে ধরার জন্য  মানুষ আন্দোলনে নেমেছে। কিন্তু এ দেশে কি আমার খুনির বিচার হবে?’  

রিশা মারাত্মক আহত হওয়ার পর মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় ৬ মাস আগে মায়ের সঙ্গে ইস্টার্ন মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের বৈশাখী টেইলার্সে যায় রিশা। সেখানে একটি ড্রেস সেলাই করতে দেয় সে। পরে দোকানের রশিদে বাসার ঠিকানা ও তার মায়ের মোবাইল নম্বর দেয়। সেই রশিদ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে টেইলার্সের কাটিং মাস্টার ওবায়দুল খান (২৯) রিশাকে ফোনে উত্ত্যক্ত করতো। পরে ফোন নম্বরটি বন্ধ করে দিলে, ওবায়দুল স্কুলে যাওয়ার পথে রিশাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ার পর রিশাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। -বাংলা ট্রিবিউন
২৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে