ঢাকা : পাসপোর্ট ভেরিফিকেশন রিপোর্ট দিতে বিচারপতির স্ত্রীর কাছে দুই হাজার টাকা ঘুষ দাবি ও মিথ্যা পরিচয় দেয়ার কারণেই ফেঁসে যান পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চে (এসবি) কর্মরত এএসআই সাদেকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার হোসনে আরা আকতার বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
এর আগে বুধবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশ দিলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মামলা দায়েরের পর শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায়।
শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে একই বেঞ্চে এ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী হোসনে আরা উল্লেখ করেন, বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের কন্যা লাবিনা তাহের ও তাবিনা তাহেরের আবেদন করা পাসপোর্টের ভেরিফিকেশনের পুলিশ গত ২৩ আগস্ট বিচারপতির ধানমণ্ডির ৭/এ -এর বাসায় যান এএসআই সাদেকুল ইসলাম।
সেখানে গিয়ে তিনি পুলিশের এসআই সালাম হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। পরে ভেরিফিকেশনের জন্য জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে দুই হাজার টাকা দাবি করেন। কিন্তু বিচারপতির স্ত্রী ডা. সাবরিনা বুঝতে না পেরে তাকে রিকশা ভাড়া ও চা খাওয়ার জন্য কিছু বখশিস দিতে চান।
কিন্তু এএসআই সাদেকুল ইসলাম তা নিতে অস্বীকার করে বলেন, দুই হাজার টাকা না দিলে পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে না।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ডা. সাবরিনা তাৎক্ষণিকভাবে সুপ্রিমকোর্টে অবস্থানরত তার স্বামী বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানকে বিষয়টি অবহিত করেন।
তখন তিনি এএসআই সাদেকুল ইসলামকে তার বাসা ত্যাগ করতে নির্দেশ দেন। পরে তিনি এএসআই সাদেকুল ইসলামকে হাইকোর্টের ৬ নম্বর কোর্টে ৩১ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে হাজির করতে এসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দেন।
আদালতে হাজির করার পর এএসআই সাদেকুল ইসলাম ঘুষ দাবির কথা অস্বীকার করে নিজেকে এসআই সালাম হিসেবে পরিচয় দেন। আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এএসআই সাদেকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৮৬০-এর ধারা ১৬১ এবং প্রযোজ্য অন্য কোনও আইনে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালত হাইকোর্টের স্পেশাল অফিসার হোসনে আরাকে নির্দেশ দেন।
এরপর তিনি এএসআই সাদেকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন। হাইকোর্টের ৬ নম্বর কোর্টের ৩১ আগস্ট-২০১৬ এর সুয়োমোটো রুলের (নং ০৮/২০১৬) নির্দেশনা অনুযায়ী এ মামলা দায়ের করেন বাদী।
শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক ৩১ আগস্ট বুধবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে দণ্ডবিধির ৪১৯ ও ১৬১ ধারায় এবং দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি রেকর্ড করেন।
ওসি জানান, আদালতের নির্দেশে এএসআই সাদেকুল ইসলামকে মামলায় গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আদালত যে নির্দেশ দেবেন, সেই অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
১ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম