এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : বিশ টাকা দিয়ে নিজের প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়ন করলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সোমবার বিকালে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে নিজের চাঁদা দিয়ে তিনি ‘বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, মেধাবীদের সামনে নিয়ে আসতে হবে। পরিশ্রমী, সত্, আদর্শবান মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। আরও বেশি করে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে। আগামী দিনে আমাদের ভালো মানুষ দরকার। কারণ, এই রাষ্ট্রটিকে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচার ধ্বংস করে দিয়েছে, অনেক পেছনে নিয়ে গেছে। কাজেই দলকে যদি পুনর্গঠিত করতে হয়, সেরকম মানুষ দরকার। সেরকম মানুষকে বের করে নিয়ে আসতে হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত। তারাসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারাও এদিন ফরম পূরণ করে তাদের সদস্যপদ নবায়ন করেন।
ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর ২০১৭ সালে বিএনপির সর্বশেষ প্রাথমিক সদস্যপদ নবায়নের কর্মসূচি হয়েছিল দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মাধ্যমে।
তারেক রহমান বলেন, জনগণের সমর্থন পাওয়ার পরে দেশকেও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশকে পুনর্গঠন করার জন্য, রাষ্ট্রকে মেরামত করার জন্য ৩১ দফা দেশের মানুষের সামনে উপস্থাপন করেছি। সেটিকে যদি বাস্তবায়ন করতে হয় অবশ্যই দলকে ঐক্যবদ্ধ পুনর্গঠিত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘তৃণমূলকে সংগঠিত করতে হবে। এখন বেশি করে কাজ করতে হবে, বিশাল কাজ আমাদের সামনে আছে। আসুন যে উত্সাহ, যে দেশপ্রেম নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গুম-খুনের পরেও শত অত্যাচার-নির্যাতনের পরেও আমরা দমে যাইনি। হাজারো-লক্ষ নেতাকর্মী নিয়ে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। ঠিক একইভাবে আসুন আবার দলকে পুনর্গঠিত করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। তাহলে রাষ্ট্রকেও পুনর্গঠন করতে পারব।'
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন রাজনীতিতে যে প্রতিযোগিতা চলছে, এটি কিন্তু স্লোগান দেওয়ার প্রতিযোগিতা নয়। এখন কিন্তু মেধা এবং বুদ্ধির প্রতিযোগিতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় কে কেমন লিখতে পারেন, কে কেমন কথা বলতে পারেন তার প্রতিযোগিতা চলছে। এ বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে। শুধু স্লোগান দিয়ে সামনের যুদ্ধ জয় করতে পারব না।
মির্জা ফখরুল বলেন, যারা সদস্য ছিলেন তাদের পদই নবায়ন হবে। এ নবায়ন ফরমগুলো জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে যাবে। সদস্যদের জানাতে হবে, আপনার সদস্যপদ নবায়ন হচ্ছে। যদি তিনি না জানেন তবে আগ্রহ হারাবেন। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি বলেন, অতীতে যেটা হয়েছে, বিশেষ করে আমাদের যারা এমপি পদপ্রার্থী, তারা সব কিনে নিয়ে চলে গেছেন। এই জিনিসটা খেয়াল রাখতে হবে। এটি যেন সাংগঠনিকভাবেই যায়। যারা এমপি পদপ্রত্যাশী তারা যেন আবার সেগুলো নিয়ে চলে না যান।
রোববার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে কিছু কর্মীর স্লোগানের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটি রাজনীতি নয়। কোনো রাজনৈতিক কর্মীর মুখ থেকে এ ধরনের স্লোগান আসা উচিত নয়। এটি রাজনীতির কত বড় দেউলিয়াপনা হতে পারে তা এখান থেকে বোঝা যায়। এ জায়গাটাতে আমাদের একটা চরম দৈন্য আছে। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় রাজনৈতিক প্রশিক্ষণ খুব জরুরি। কিভাবে বক্তৃতা করতে হবে, কিভাবে একটা সভা চলে, কিভাবে উপস্থাপনা করবেন, অ্যাড্রেস কিভাবে করবেন এই জিনিসগুলোর খুব বেশি প্রয়োজন। সত্যিকার অর্থে আমাদের একটি রাজনৈতিক দল তৈরি করা দরকার। আমাদের এখন সত্যিকার অর্থেই একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দলে পরিণত হতে হবে। তিনি বলেন, সামনে যখন আমরা দলে রিক্রুট করব তখন যেন ভালো ও মেধাবী মানুষদের সদস্য করি। দল যেন সামনে আরও শক্তিশালী হয়।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদষ্টো আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শামা ওবায়েদ, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, শরীফুল আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।