শুক্রবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৪৮:৫৮

দেশের ৩টি বিমানবন্দরে বসছে উচ্চ প্রযুক্তির মানব স্ক্যানার

দেশের ৩টি বিমানবন্দরে বসছে উচ্চ প্রযুক্তির মানব স্ক্যানার

নিউজ ডেস্ক : হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরসহ দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ প্রযুক্তির মানব স্ক্যানিং ডিভাইস স্থাপন করা হচ্ছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে প্রথমবারের মতো এ ধরনের স্ক্যানার স্থাপন করতে প্রস্তাব দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

গত মাসে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ প্রস্তাব দেয়া হয়। দেশের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে দ্রুত এ স্ক্যানার স্থাপন করা জরুরি, এমন চিন্তা থেকে শিগগির এ সংক্রান্ত ক্রয় প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে। সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ২৮ আগস্ট শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠান। এতে বলা হয়, উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে মানব স্ক্যানিং ডিভাইস স্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে মানবদেহের অভ্যন্তরে বহনকৃত যে কোনো পণ্যের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। কোনো প্রকার রেডিয়েশন ছাড়াই এ স্ক্যানার যাত্রীর দেহের পরিপূর্ণ স্ক্যানিং করতে সক্ষম।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর বলছে, দেশের বিমানবন্দরগুলো নিয়ে দেশী-বিদেশী ব্যক্তি ও সংস্থা নানা ধরনের উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। এ ধরনের উদ্বেগকে মাথায় রেখে ৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত তিনটি বিমানবন্দরে একযোগে অপারেশন আইরিন পরিচালনা করা হয়। এছাড়া বর্তমানে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে দেশের বিমান বন্দরগুলোর নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও নিচ্ছিদ্র করা দরকার।

এজন্য হযরত শাহজালাল, চট্টগ্রামের হযরত শাহ আমানত ও সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আগমন ও বহির্গমন পয়েন্টে মানব স্ক্যানার বসানো প্রয়োজন। উন্নত প্রযুক্তির এসব মানব স্ক্যানার স্থাপিত হলে বিমানবন্দরে মাদক ও সোনা পাচার নিয়ন্ত্রণসহ নিরাপত্তাজনিত আশংকার অনেকটাই অবসান ঘটবে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, বিমানবন্দর দিয়ে সোনা, দেশী-বিদেশী মুদ্রা, মাদকদ্রব্যসহ বিভিন্ন পণ্য পাচার হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় এসব পণ্যের বড় বড় চালানসহ একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু মানব স্ক্যানার না থাকায় দেহের অভ্যন্তরে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে পাচারকৃত পণ্য উদ্ধার করা দুরূহ হয়ে পড়ে।

প্রসঙ্গত, ১৪ আগস্ট কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ঢাকায় আসা এক যাত্রীকে মাদক পাচারকারী সন্দেহে আটক করা হয়। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এক্স-রে করার পর তার দেহের অভ্যন্তরে অভিনব কায়দায় লুকানো ইয়াবা ট্যাবলেটের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। এ সময় অপারেশন করে তার পাকস্থলী থেকে চার হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। এর আগেও বেশ কয়েকজন যাত্রী এভাবে সোনা পাচারের সময় গ্রেফতার হন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মানবদেহের পুরোপুরি স্ক্যানিং করা সম্ভব নয়। তবে মানব স্ক্যানার দিয়ে যাত্রীর অগোচরে তার দেহের অভ্যন্তরে লুকানো যে কোনো বস্তু কিংবা পণ্যের সূক্ষ্ম ইমেজ চিহ্নিত করতে সক্ষম।

তিনি বলেন, এ ধরনের স্ক্যানার বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় উচ্চমাত্রা যোগ করবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বলেন, তিনটি বিমানবন্দরের জন্য মোট সাত সেট স্ক্যানার মেশিন প্রয়োজন। এর মধ্যে ঢাকায় তিনটি এবং সিলেট ও চট্টগ্রামে দুটি করে স্ক্যানার বসাতে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা খরচ হবে। এগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকবে সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউসের হাতে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানব স্ক্যানারে ধারণকৃত ছবির গোপনীয়তা রক্ষায় পূর্ণ নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা হবে।
২ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে