শুক্রবার, ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৬:২১:২৪

‘আজ হচ্ছে না মীর কাসেম আলীর ফাঁসি’

‘আজ হচ্ছে না মীর কাসেম আলীর ফাঁসি’

ঢাকা : একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি আজ কার্যকর হচ্ছে না।
 
একটি অনলাইন পোর্টালকে এ তথ্য জানিয়েছেন কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক।

তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না তা আজ শুক্রবার পরিষ্কার করেছেন মীর কাসেম আলী।  এ কারণে হয়তো অনেকে মনে করছেন আজই তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে।
 
জেল সুপার জানান, আজ ফাঁসি কার্যকরের কোনো প্রস্তুতি কারা কর্তৃপক্ষের নেই।  কখন ফাঁসি কার্যকর করা যেতে পারে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে সময়-ক্ষণ ঠিক করা হবে।
 
প্রশান্ত কুমার বনিক জানান, মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের যেভাবে ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে ওই প্রক্রিয়ায় মীর কাসেম আলীকেও কার্যকর করা হবে।
 
তিনি জানান, ফাঁসি কার্যকরের আগ মুহূর্তে মীর কাসেম আলীর স্বজনরা তার সঙ্গে আরো একবার দেখা করার সুযোগ পাবে।  এজন্য কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ডেকে পাঠাবে।  তবে আজ তাদের ডাকার কোনো সম্ভাবনা নেই।
 
জেলার নাসির আহমদ জানান, মীর কাসেম আলী কনডেম সেলে আছেন।  তিনি সুস্থ আছেন। কারাগারের চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাকে স্বাভাবিক খাবার দেয়া হয়েছে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামী নেতা মীর কাসেম আলী প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন না বলে আজ শুক্রবার  
লিখিতভাবে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন।  এর ফলে মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা নেই।  

এ কথা জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন।

শুক্রবার বিকেলে সাংবাদিকদের তিনি জানান, মীর কাসেম আলী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।

জানা গেছে, এরই মধ্যে যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসির দণ্ড কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কার্যকর করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।

এরই মধ্যে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত করে প্রাথমিক মহড়া দেয়া হয়েছে।  প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে জল্লাদ দলকেও।  তবে আজ শুক্রবার ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিক গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারের আদেশ পেলে রায় কার্যকর করা হবে। এজন্য আমাদের যাবতীয় প্রস্তুতি আছে।

৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম আলী ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর থেকে এ কারাগারেই রয়েছেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তির পর তাকে ফাঁসির কনডেম সেলে স্থানান্তর করা হয়।

২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মীর কাসেম আলীকে ২টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড এবং ৮টি অভিযোগে ৭২ বছরের কারাদণ্ড দেন।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করেন।  আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৮ মার্চ আপিল বিভাগ কিশোর মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহমেদকে খুনের দায়ে ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।

এছাড়া আরো ছয় অভিযোগে ৫৮ বছর কারাভোগের সাজা বহাল রাখেন।  গত ৬ জুন আপিল বিভাগ মীর কাসেমের ফাঁসি বহাল রেখে ২৪৪ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন।

মীর কাসেম ১৯ জুন ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চেয়ে রিভিউ আবেদন দাখিল করেন।  রিভিউ আবেদনে ১৪টি যুক্তি উত্থাপন করে ফাঁসির দণ্ড থেকে খালাস চান তিনি।  এই রিভিউ আবেদনের ওপর ২৪ আগস্ট শুনানি শুরু হয়।

২৮ আগস্ট শুনানি গ্রহণ শেষ করে ৩০ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য করা হয়।  ৩০ আগস্ট মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ রিভিউ আবেদন খারিজের রায় দেন।

মীর কাসেম আলী জামায়াতে ইসলামীর অন্যতম অর্থ যোগানদাতা বলে চাউর রয়েছে।  জামায়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশকিছু আর্থিক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার তিনি।
২ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে