জাকিয়া আহমেদ : আজিমপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে শনিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার হওয়া তিন নারী জঙ্গিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থাতে ওই জঙ্গিরা অঘটন ঘটাতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সেই আশঙ্কা থেকেই তাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এখনও পরিবারের কেউ ওই তিন নারীর খোঁজ নিতে আসেননি বলেও জানিয়েছে তারা।
শনিবার সন্ধ্যার পর আজিমপুরে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। অভিযান চালাতে গেলে ভেতরে থাকা নারী জঙ্গিরা পুলিশকে ছুরিকাঘাত ও মরিচের গুড়া মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাদের আটক করে পুলিশ।
ঘটনার পরপরই রাত সোয়া ৮টার দিকে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রথমে তাদেরকে চিকিৎসা দেওয়া হয় জরুরি বিভাগে। অপারেশন শেষে সেদিনই দুজনকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। তবে জেবুন্নাহার নামের নারী জঙ্গির অবস্থা গুরুতর হওয়াতে তাকে চিকিৎসকদের অবজারভেশনে রাখা হয় জরুরি বিভাগের অস্ত্রোপচার কক্ষে।
কেবিনে ওই জঙ্গিদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ‘ওই তিন নারী জঙ্গি নব্যধারা জেএমবির আত্মঘাতী সদস্য।গত শনিবার পুলিশের অভিযানের সময় তারা নিজেরা আত্মহুতী দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থাতেও যেন কোনও ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে, সেজন্য পুলিশের নারী সদস্যরা সবসময় তাদের সঙ্গে রয়েছেন।’
তবে প্রতিষ্ঠানের আবাসিক সার্জন ডা. জেসমিন নাহার জানান, গুরুতর আহত খাদিজাকে পরদিন সকালেই (রবিবার) কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, খাদিজার অবস্থা এখনও শঙ্কামুক্ত বলা যাচ্ছে না।
ডা. জেসমিন নাহার বলেন, ‘তিন নারী জঙ্গির একজন শাহেলা। তার বুকে ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আর শারমিনের শরীর গুলিবিদ্ধ ছিল। তার শরীর থেকে গুলি বের করা হয়েছে। জেবুন্নাহারের মাথা ও বুকে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। হাসপাতালে সে নিজের নাম খাদিজা বলে উল্লেখ করেছে।’
সোমবার (১২/৯/২০১৬) তারিখে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, কেবিন ব্লকের তিনতলায় তাদের চিকিৎসা চলছে। সেখানে দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যা কেবিনের কাছেও চিকিৎসক, সেবিকাসহ সংশ্লিষ্টদের ছাড়া কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে পুলিশের রমনা বিভাগের উপপরিচালক মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘এই তিন নারী জঙ্গির চিকিৎসায় যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সর্ম্পকে খোঁজ নিতে এখন পর্যন্ত কোনও আত্মীয়স্বজন আসেনি।’
অভিযান সম্পর্কে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপকমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন অভিযানের পর জানিয়েছিলেন, ‘নারী জঙ্গিদের অতর্কিত হামলার পাশাপাশি পুরুষ জঙ্গি সদস্য তাদের লক্ষ করে বোমা হামলা চালায়। বোমার স্প্রিন্টার ও ছুরিকাঘাতে আহত হন পুলিশের পাঁচ সদস্য। এ সময় পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে জঙ্গি করিম নিহত ও তার স্ত্রীসহ তিন নারী জঙ্গি আহত হয়।’ - বাংলা ট্রিবিউন
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি