বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৬:২৯:৫০

নেতাকর্মীদের কাছে যেমন ছিলেন হান্নান শাহ

নেতাকর্মীদের কাছে যেমন ছিলেন হান্নান শাহ

নিউজ ডেস্ক : না ফেরার দেশে চলে গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আ স ম হান্নান শাহ। তার মৃত্যুতে বিএনপিতে যেন কালো মেঘের ছায়া নেমে এসেছে। এ নেতার বিয়োগে জাতির চরম ক্ষতি হয়েছে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিশেষ করে ১/১১ তে বিএনপির দুঃসময়ে কাণ্ডারির এই নেতার সাহসিকতার ভূমিকার কথায় যেন বারবার সামনে চলে আসছে। বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতাদের আত্মগোপন কৌশল নিয়ে রাজনীতির মাঠে যখন তুমুল সমালোচনায় তখনো ডার্কসাইড থেকে দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি।

দলের নেতাকর্মীরা বলছেন, স্বশস্ত্র বাহিনী থেকে আসা এ নেতা রাজনীতিতে সবসময় সরব ছিলেন। কারো রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে কখনো নিজেকে গুটিয়ে রাখেননি। অকুতোভয় এ নেতার মৃত্যুতে যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়।

নয়াপল্টন কার্যালয়ের রেকর্ড কিপার শোকাহত আব্দুল গাফফার বলেন, এমন এক নেতা অসময়ে চলে গেলেন যার উপস্থিতি দলে আরো প্রয়োজন ছিল।

তিনি বলেন, ১/১১ সরকারের সময় যখন বিএনপি নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে ছিল তখন তার সাহসী নেতৃত্বের কারণে দল ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে শীর্ষ নেতাদের মধ্যে হান্নান শাহের মতো সাহসী কোনো নেতা নেই।

মৃত্যুর আগে কল্যাণপুরে জঙ্গি হামলা নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করে রাজনীতির মাঠে ঝড় বইয়ে দিয়েছিলেন এই নেতা। তখনো কোনো হুমকি আমলে নেননি তিনি। কোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিলে সপ্তাহজুড়েই আলোচনা-সমালোচনা হতো তাকে নিয়ে।

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এ নেতার এমন মৃত্যু ভয়াবহ শূন্যতার সৃষ্টি করবে বলেও মনে করেন অনেকে।

বিএনপিতে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি ঢাকা বিভাগীর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, হান্নান শাহের মতো সাহসী বীর সবসময় জন্ম নেয় না। তার রক্তেই ছিল জাতীয়তাবাদ আর বিদ্রোহের মানসিকতা। দলের জন্য নিবেদিত এ নেতার মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

হান্নান শাহের মৃত্যুতে দলের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক সেনা প্রধান লে. জে. (অব) মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, হান্নান শাহ দীর্ঘদিন আমার সহযোদ্ধা ছিলেন। নির্ভিক সৈনিক ছিলেন। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।

পরিবারকে সান্ত্বনা জানিয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, হান্নান শাহের মৃত্যুতে বিএনপির বড় ধরনের লোকশান হয়েছে। আমরা অভিভাবক হারালাম। তিনি সেনাবাহিনীতে এবং বিএনপিতে শত্রুকে ভয় পেয়ে কখনো পিছপা হননি। তিনি অত্যন্ত সাহসী ছিলেন। ন্যায় পরায়ন ছিলেন।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ভোরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন হান্নান শাহ। বিএনপির সর্বোচ্চ দলীয় নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির এই সদস্য চারদলীয় জোট সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য ছিলেন।

প্রাক্তন এই সেনা কর্মকর্তা চাকরি জীবন শেষে বিএনপির রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০১ সালে বিএনপির শাসনামলে পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি।

মৃত্যুকালে আ স ম হান্নান শাহ স্ত্রী নাহিদ হান্নান, দুই ছেলে শাহ রেজাউল হান্নান, শাহ রিয়াজুল হান্নান ও এক মেয়ে শারমিন হান্নান সুমিকে রেখে গেছেন। জাগো নিউজ

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে