বুধবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৩:৩৪:৪৯

যে কারণে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না বাংলাদেশ

যে কারণে সার্ক সম্মেলনে যোগ দিচ্ছে না বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান হস্তক্ষেপ করায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) শীর্ষ সম্মেলনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। সার্ক চেয়ারম্যান নেপালের প্রধানমন্ত্রী এবং সার্ক সচিবালয়কে মঙ্গলবার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।  

বুধবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘নভেম্বর মাসের ৯-১০ তারিখে ইসলামাবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারত, আফগানিস্তান ও ভুটান শীর্ষ সম্মেলনে যাবে না বলে গতকাল জানিয়ে দিয়েছে।’

এ সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অন্য কোনও রাষ্ট্রের প্রভাব আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্য কোনও রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই। এটি বাংলাদেশে নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘সার্ক সচিবালয়কে লেখা চিঠিতে জানানো হয়েছে, সার্কের প্রতিষ্ঠাতা দেশ হিসেবে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রতি বাংলাদেশের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কিন্তু একটি দেশ আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অব্যাহতভাবে হস্তক্ষেপ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর প্রতিবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।  আমরা তাদের জানিয়েছি, এ ধরনের পরিবেশ সম্মেলনের উপযোগী নয়। নতুন পরিবেশে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হলে বাংলাদেশ এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করবে।’

এ সময় তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে, বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া ও পরবর্তীতে তাদের ফাঁসি কার্যকরের প্রশ্নে কখনও আপোস করিনি, কখনও করবোও না।’

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনা পর্যালোচনা করে। আমরা এখনও দু’দেশের সম্পর্ক পর্যালোচনা করছি।

প্রসঙ্গত বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রশ্নে বরাবরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আসছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ সরকারের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও কখনও দেশটির সরকার, কখনওবা তাদের পার্লামেন্টে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছেই এবং মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্তদের ইসলামি ধর্মীয় নেতা হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্বব্যাপী বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে দেশটি। সর্বশেষ মীর কাসেম আলীর ফাঁসির পরেও পাকিস্তান সরকার বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিলে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয় বাংলাদেশ সরকার। এরপর দেশটির রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এ বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়। বিষয়টিকে তখন থেকেই অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ।
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে