বুধবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:২৫:১৮

আ.লীগের সহযোগী সংগঠনে সম্মেলনের তোড়জোড়

আ.লীগের সহযোগী সংগঠনে সম্মেলনের তোড়জোড়

রফিকুল ইসলাম রনি : আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সময়সীমা বেঁধে দেয়ার পর কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেতে সহযোগী সংগঠনে সম্মেলনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। হাইকমান্ডের ইতিবাচক সাড়া মিললে নভেম্বরের মধ্যেই সম্মেলন সম্পন্ন করতে পারে যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ এবং যুবলীগের দু-চার জন শীর্ষ নেতা এখন আর স্ব স্ব সংগঠনের নেতৃত্বে থাকতে চান না। তারা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগে নাম লেখাতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দলীয় সভানেত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। মূল সংগঠনের কাউন্সিলের আগেই সংগঠনের সম্মেলনের জন্য জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন তারা।

আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাতটি সহযোগী এবং তিনটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন রয়েছে। সহযোগী সংগঠনের মধ্যে রয়েছে যুবলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুব মহিলা লীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ ও তাঁতী লীগ। ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হলো ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ। এসব সংগঠনের মধ্যে ২০০৩ সালের ১২ জুলাই মহিলা আওয়ামী লীগ, ২০০৪ সালের ১৫ মার্চ যুব মহিলা লীগ, ২০০৪ সালের ৫ সেপ্টেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ২০০০ সালের ২০ জুলাই আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ এবং ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট তাঁতী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া ২০১২ সালের ১১ জুলাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ১৪ জুলাই যুবলীগ, ১৭ জুলাই জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং ১৯ জুলাই কৃষক লীগের সম্মেলন হয়।

আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মধ্যে একমাত্র ছাত্রলীগ ছাড়া প্রতিটি সংগঠনই এখন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়েছে। এতদিন তাদের সম্মেলন করার তাগাদা না থাকলেও আগামী ডিসেম্বরেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের সময়সীমা বেঁধে দেয়ায় সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ পেতে ভিতরে ভিতরে ব্যাপক লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই সংগঠনের মধ্যে সম্মেলনের প্রস্তুতিও শুরু করেছেন তারা।

সম্প্রতি যুবলীগের এক সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, আমাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা যে কোনো সময়ে কংগ্রেস করার নির্দেশ দিতে পারেন। চেয়ারম্যানের এমন বক্তব্যে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে এখন কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের আবহ সৃষ্টি হয়েছে। হাইকমান্ডের ইতিবাচক সাড়া মিললে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হতে পারে।

ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির কাউন্সিলের আগেই নভেম্বরের মধ্যে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন সম্পন্ন করার আভাস মিলেছে সংগঠনের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে। ইতিমধ্যে আগামী ৬ নভেম্বর স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।

মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আশরাফুন্নেছা মোশাররফ এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদককে বলেন, আমি সব সময়ই সম্মেলন করতে প্রস্তুত। নেত্রী দেশে ফিরলেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সম্মেলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।

যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমা আক্তার এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করি। মূল সংগঠনে স্থান পাওয়া-না পাওয়া নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রীর ইচ্ছার ওপর। তিনি চাইলে আমরা কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পেতে পারি। আগামী নভেম্বরের মধ্যেই যুব মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।

কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার শামসুল হক রেজা প্রতিবেদককে বলেন, এখন পুরোদমে কৃষক লীগের জেলা সম্মেলন চলছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের জন্য প্রস্তুত।

যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মহি এই প্রতিবেদককে বলেন, আমাদের সাংগঠনিক নেত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা। তিনি যে নির্দেশ দেবেন, যুবলীগ চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক সে নির্দেশই পালন করবেন।

কৃষক লীগের নেতারা মূল সংগঠনে আসতে চেষ্টা করছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষক লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবেদককে বলেন, সবারই একটা লক্ষ্য থাকে। আমরাও সে লক্ষ্য নিয়েই রাজনীতি করছি। মূল সংগঠনে নিজেদের অন্তর্ভুক্তির প্রত্যাশা দোষের কিছু নয়।-বিডিপ্রতিদিন
৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে