বৃহস্পতিবার, ০৮ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:০৭:০৮

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোথায় খুনিরা?

পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোথায় খুনিরা?

শাহীন করিম : ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেল্লা হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন ও জাপানি নাগরিক কোনিও হোসি খুনের পর পাঁচ দিন গড়িয়ে গেছে। এই দুই বিদেশির খুনিদের গ্রেফতারে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিকাংশ ইউনিটের সদস্যরা। খুনিদের ধরতে গোয়েন্দা জাল পেতে বসে আছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। শনাক্ত করা ও গ্রেফতার অভিযান চালাতে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় সব নির্দেশনা দিচ্ছেন শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারা। তবু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাতা জালে আটকা পড়েনি খুনিরা। স্পষ্ট হয়নি হত্যাকাণ্ডের মোটিভও।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হলেও এখনো দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তাহলে দেশের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টায় লিপ্ত খুনিরা পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোথায় পালাল? এমন প্রশ্নসহ নানা প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

এদিকে রংপুরে নিহত জাপানি নাগরিকের লাশ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত এখনো চূড়ান্ত হয়নি। লাশ এখনো পড়ে আছে রংপুর মেডিকেলের হিমঘরে। একইভাবে ঢাকায় নিহত সিজার তাভেল্লার লাশ পড়ে আছে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে।

রংপুরের গ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে খুন হওয়া জাপানি নাগরিক কোনিও হোসি খুনের ঘটনায় গ্রেফতার বিএনপির নেতা বিপ্লবের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলছে বলে পুলিশের একটি সূত্র দাবি করছে। এ হত্যা মামলার অগ্রগতি বিষয়ে রংপুর সফররত জাপানি পুলিশের চার সদস্যের প্রতিনিধি দল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে দাবি করেছেন রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি আবদুল মালেক। গতকাল বুধবার দুপুরে নিজ চেম্বারে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অপরদিকে ঢাকার গুলশানে একই কায়দায় ইতালীয় নাগরিক তাভেল্লার হত্যা মামলায় কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি ও আরো তিনটি তদন্ত সহায়তা ও মনিটরিং কমিটি গঠন করা হলেও এখনো কোনো সুফল মেলেনি। তবে মুখ খুলছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অপরদিকে রাজধানীর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেল্লা খুনের সঙ্গে জড়িত খুনিদের ১০ দিনেও শনাক্ত কিংবা গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, আমরা বেশ কয়েকটি দিক নিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। মোবাইল ফোনের কললিস্ট যাচাই-বাছাই, ভিডিও ফুটেজ থেকে ছবি নিয়ে মাঠে অভিযান চালানো এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে সম্ভাব্য খুনিদের একটি তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে। তবে তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। গোয়েন্দাদের ধারণা, তাভেল্লার কিলার গ্রুপের সঙ্গে কোনো একটি শক্তিশালী মহলের যোগাযোগ ছিল। তবে ওই শক্তিশালী মহলটি সন্ত্রাসী গ্রুপ না হলেও কোনো একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।

এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এত তৎপরতার পরও দুই বিদেশির খুনিরা গ্রেফতার না হওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন মহলের আলোচনা, থানা পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব, সিআইডি, পিবিআইসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। কিন্তু তারপরও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিভাবে ও কোথায় পালিয়ে আছে বিদেশিদের খুনিরা।

উল্লেখ্য, ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান-২ নম্বরের ৯০ নম্বর সড়কের পাশে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন ইতালীয় নাগরিক সিজার তাভেল্লা (৫০)। আর ৩ অক্টোবর সকালে রংপুরের কাউনিয়ার আলুটারি এলাকায় জাপানি নাগরিক কোনিও হোসিকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।-মানবকণ্ঠ
৮ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে