সোমবার, ০৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:৩৩:৪৭

জব্দ করা সেই বিপুল মানব কঙ্কাল আনা হয়েছিল ময়মনসিংহ থেকে

জব্দ করা সেই বিপুল মানব কঙ্কাল আনা হয়েছিল ময়মনসিংহ থেকে

আমানুর রহমান রনি: সম্প্রতি কাফরুলের ফ্ল্যাট বাসা থেকে জব্দ করা মানব কঙ্কালগুলো আনা হয়েছিল ময়মনসিংহ এলাকা থেকে। শিক্ষার্থীদের কাছে এসব কঙ্কাল চড়ামূল্যে বিক্রি করা হতো। কঙ্কাল বাণিজ্যের এই চক্রটিকে ধরতে পুলিশ ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অভিযান চালাচ্ছে। আটকৃত নুরুজ্জামান ওরফে কামরুজ্জামান (৩৮) নিজেকে মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলেও কোনও পরিচয়পত্র তিনি দেখাতে পারেননি।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর জোনের পুলিশের এক কর্মকর্তা সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, নুরুজ্জামান ওরফে কামরুজ্জামান পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর নিজেকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থী পরিচয় দিয়েছিল। তবে কোনও পরিচয়পত্র সে দেখাতে পারেনি। তাকে নিয়ে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। এই ব্যবসার সঙ্গে একটি চক্র জড়িত, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, কঙ্কালগুলোর কয়েকটি ময়মনসিংহ অঞ্চল ও সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। সব কঙ্কাল বিক্রি করার কথা স্বীকার করেছেন নুরুজ্জামান।

রাজধানীর কাফরুলের ইটখোলার ১৮৩/১ নম্বর বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে শনিবার (৫ নভেম্বর) বিকালে ৩৩টি মানব কঙ্কাল উদ্ধার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আহমেদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।

উপকমিশনার জানান, বহুতল ওই ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটটি থেকে কার্টন ভরা মানব কঙ্কাল পাওয়া গেছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

বাড়িটির মালিক ইলিয়াস সাইফুল্লা জানান, ‘ভবনের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটটি গতমাসে নুরুজ্জামান (৩৮) নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসক পরিচয় ভাড়া নেন। শনিবার দুপুরের আগে বাড়ির তৃতীয় তলার ফ্ল্যাটের বাসিন্দা একজন ব্যাংক কর্মকর্তা বিকট গন্ধ পেয়ে দ্বিতীয় তলার দরজায় নক করেন। তবে ভাড়াটে নুরুজ্জামান দরজা খুলতে দেরি করেন। কিছুক্ষণ পর দরজা খুললে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সেখানে কার্টনভর্তি কঙ্কাল দেখতে পান। এরপর তিনি ঘটনাটি আমাকে (বাড়িওয়ালা) জানান। সঙ্গে সঙ্গে আমি  বিষয়টি থানায় জানাই। এরপর পুলিশ অভিযান চালায়।’

বাড়িওয়ালা আরও বলেন, নুরুজ্জামানের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ। তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। তার সঙ্গে আরও দু’জন কর্মচারীও ছিল। কর্মচারী দু’জনকে এখন পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশের ভাড়াটে তথ্য ফরমে নুরুজ্জামানের সব তথ্য দেওয়া আছে।

প্রত্যক্ষদর্শী আজিজুর রহমান প্রান্ত জানান, ওই ভবনের পাশে তার থাইগ্লাস ও অ্যালুমিনিয়ামের দোকান আছে। খবর পেয়ে আমি ওই বাসায় যাই। ফ্ল্যাটের ভেতরে আমি চার থেকে পাঁচ কার্টন কঙ্কাল দেখেছি। কঙ্কাল দেখেছি ব্যাগের ভেতরও। -বাংলা ট্রিবিউন।
০৭ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে