নিউজ ডেস্ক : ঝিনাইদহে দুর্বৃত্তের হামলায় আহত মুক্তিযোদ্ধা মুক্তার হোসেন মৃধাকে গত শনিবার ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁর ডান হাতে আবার অস্ত্রোপচার করতে হবে। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে আহত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হোসনে আরা মৃধা (৫৫) আজ মঙ্গলবার এ কথা জানান।
আহত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে সুমন মৃধা তাঁর বাবাকে কুপিয়ে আহত করার একটি ভিডিও চিত্র গতকাল সোমবার ফেসবুকে পোস্ট করেন। দুর্বৃত্তদের হামলার দৃশ্যটি স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরায় ধরা পড়ে। ভিডিওটি পোস্ট করার পর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
আহত মুক্তার হোসেন মৃধা (৬৫) ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগ নির্বাহী কমিটির সদস্য। শৈলকুপা উপজেলার আবাইপুর ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) দুবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। শৈলকুপার কবিরপুর এলাকায় সপরিবারে বাস করেন মুক্তার হোসেন। গত ১৮ অক্টোবর একদল সন্ত্রাসী পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাঁকে গুরুতর আহত করে। এ সময় তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর তৃতীয় ছেলে ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মুরশিদ মৃধাও (৩০) সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন। ওই ঘটনায় মুক্তার হোসেনের দ্বিতীয় ছেলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী সুমন মৃধা বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেন।
মামলার বাদী সুমন মৃধা গতকাল জানান, তাঁর বাবা সন্ধ্যায় প্রায়ই কবিরপুর শহরের জাকির মেডিকেল নামের একটি ওষুধের দোকানে বসতেন। গত ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় সেখানে বসে ছিলেন। সন্ধ্যা সাতটার দিকে নিজ দলের প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ তাঁর বাবাকে ওপর হামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি পেটাতে ও কোপাতে থাকে। এ সময় পাশে থাকা তাঁর ভাই কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম মুরশিদ মৃধা বাবাকে বাঁচাতে ছুটে আসেন। সন্ত্রাসীরা তাঁকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। মুক্তার হোসেন মৃধার ডান হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। ছেলে গোলাম মুরশিদ মৃধার দুই পা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়।
সুমন মৃধা অভিযোগ করেন, মামলার আসামিরা তাঁকে হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ শুরুতে একজনকে গ্রেপ্তার করলেও অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপর নয়।
সুমন মৃধা জানান, ওষুধের দোকানে সিসি ক্যামেরায় হামলার পুরো ঘটনাটি ধরা পড়েছে। তিনি সেই ভিডিও সংগ্রহ করে গতকাল তাঁর ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করেন।
আহত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী হোসনে আরা সকালে জানান, স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার পর মোক্তার হোসেনকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মোক্তার হোসেনের ডান হাতে আবার অস্ত্রোপচার করতে হবে। তিনি জানান, তাঁদের চার ছেলে ও এক মেয়ে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার পর মামলা নেওয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন জামিয়ে মুক্ত। মামলাটির তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান। -প্রথম আলো।
০৮ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম