বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১০:২৪:৩২

৩৪ রোহিঙ্গাকে পুড়িয়ে হত্যা: ‘গুলি করে মেরে ফেলুন, তাদের হাতে তুলে দিলে নৃশংসভাবে হত্যা করবে’

৩৪ রোহিঙ্গাকে পুড়িয়ে হত্যা: ‘গুলি করে মেরে ফেলুন, তাদের হাতে তুলে দিলে নৃশংসভাবে হত্যা করবে’

নিউজ ডেস্ক : মায়ানমারে গত রবি ও সোমবার ৩৪ রোহিঙ্গাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে দেশটির সৈন্যরা। যার ফলে জীবন বাঁচাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে শত শত রোহিঙ্গা।

বিজিবির নজরদারি কঠোর হওয়ায় বাংলাদেশে ঢুকতে পারছে না রোহিঙ্গারা। দেশটিতে সেনা অভিযানে ৪০ হাজারের মতো রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি হারিয়েছে। এরা বর্তমানে বন-জঙ্গল, সাগরকূল ও সীমান্ত এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।

বিশেষ করে মায়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে রোহিঙ্গাদের ভিড় জমেছে। প্রতি রাতেই সীমান্ত পার হয়ে এরা বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করছে।

সর্বশেষ গত মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার পর বিজিবির হাতে আটক হয়েছে।

৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার জানান, আটক ৬৬ মায়ানমার নাগরিককে খাবার ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে মায়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

এদিকে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সু চির সরকারি বাহিনীর বর্বরতা ও মগ দস্যুদের নৃশংসতা থেকে বাঁচতে নাফ নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আসা ৬৭ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বাংলাদেশের পুলিশ।

এদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। গতকাল সকালে উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালীতে এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়।

এ সময় পাচারের সহযোগী হিসেবে চার স্থানীয় বাংলাদেশীকেও আটক করে পুলিশ। আটককৃত নারীরা এ সময় আর্তকণ্ঠে জানায়, যাদের ভয়ে জীবন বাঁচাতে পালিয়ে এসেছি দয়া করে আমাদেরকে তাদের হাতে তুলে দেবেন না। আপনারা আমাদের গুলি করে মেরে ফেলুন এতে আমাদের কষ্ট কম হবে। কারণ মায়ানমারের বর্বর বাহিনী আমাদের নৃশংসভাবে হত্যা করবে।

আটককৃতরা মায়ানমারের মংডু কেয়ারীপাড়ার বাসিন্দা। মায়ানমারের সেনাসদস্যরা তাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ায় গত কয়েক দিন লতাপাতা খেয়ে তারা বনজঙ্গলে অবস্থান করছিল। তারা পাহাড়ি পথ হেঁটে নাফনদী পর্যন্ত এসে নৌকায় উনচিপ্রাং সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছে।

তারা বলেন, কতটুকু অসহায় হলে মানুষ নিজ জন্মভিটা ছাড়ে তা আমাদের অবস্থায় না পড়লে কেউ বুঝবে না। এখানকার (বাংলাদেশ) সরকার কারাগারে দিলেও তো প্রাণে বাঁচব। ওখানে বর্বর নির্যাতনের মাধ্যমে পশুর মতো আমাদের হত্যা করা হচ্ছে। তারা আরো জানান, রাখাইন প্রদেশ মংডুর বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে রোহিঙ্গাদের পুড়িয়ে মারার ঘটনা সে দেশের নীতিনির্ধারক মহলের নতুন কৌশল।

এ দিকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শফিউল আলম, ওসি আব্দুল মজিদ রাখাইন পল্লী পরিদর্শন ও বসতিদের অভয় দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় থাকে। টেকনাফ থানার ওসি আব্দুল মজিদ জানান, অনাকাক্সিত যেকোনো ধরনের ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সার্বণিক পুলিশ প্রহরা বসানো হয়েছে বৌদ্ধবিহারে।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল কক্সবাজারের একটি হোটেলে বাংলাদেশের বিজিবি ও মায়ানমারের বিজিপি কর্মকর্তা পর্যায়ে দিনব্যাপী পতাকা বৈঠক হয়েছে। -ওয়েবসাইট।
২৪ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে