রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬, ০১:০৪:৪৪

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সতর্ক ইসি

রোহিঙ্গা ইস্যুতে সতর্ক ইসি

তামান্না মোমিন খান : রোহিঙ্গারা যেন ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমান মিয়ানমার পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। যেসব রোহিঙ্গার নতুনভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে বা আগে থেকে যারা এদেশে অবস্থান করছে সে সব রোহিঙ্গা যেন ভোটার তালিকা হালনাগাদে অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক রয়েছে ইসি।

গত ২৫শে নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকা হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহের কাজ। চলবে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন- মিয়ানমার সীমান্তবর্তী পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি জেলা এবং কক্সবাজার তিনটি জেলাকে বিশেষ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। রোহিঙ্গারা যেন ভোটার হতে না পারে সে বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া আছে। এসব এলাকায়  রোহিঙ্গারা নতুন নয়- এরা অনেক আগে থেকেই আছে। বিশেষ এলাকায় যেহেতু বিশেষ কমিটি  রয়েছে তাই রোহিঙ্গাদের এখানে ভোটার হওয়া সহজ নয়। যদি না তারা অসাধু পন্থা অবলম্বন করে। এবং স্থানীয় প্রশাসন তাদের ভোটার হতে সহযোগিতা না করে।

অবৈধ ভোটারদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে যত রকম ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বান্দরবান ও রাঙ্গামাটি এবং কক্সবাজার তিনটি জেলার ১৪টি উপজেলায় ভোটারদের তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হয় বিশেষ ফরম। এসব উপজেলার ইউএনও, গোয়েন্দা সংস্থা ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছে  বিশেষ  কমিটি।  

সীমান্তবর্তী চিহ্নিত ১৪ উপজেলা হচ্ছে- কক্সবাজারের সদর উপজেলা, চকোরিয়া, টেকনাফ, রামু, পেকুয়া, উখিয়া ও মহেশখালী, বান্দরবানের সদর উপজেলা, আলিকদম, লামা, নাইক্ষংছড়ি, রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি, কাপ্তাই উপজেলা ও কক্সবাজারের কুতুবদিয়া। এসব উপজেলায় তথ্য সংগ্রহে বিশেষ ফরমে ভোটারদের আদিনিবাস, পিতা, পিতামহের ঠিকানা, সম্পত্তি ও নিকট আত্মীয়দের পরিচয়সহ অন্তত ১৫ ধরনের তথ্য দিতে হয়। তথ্য সংগ্রহের পর বিশেষ কমিটি এসব ফরম যাচাই-বাছাই করে দেখে।

২০১৪ সালের  ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম  কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য তিনটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। সে সময় ইসি সচিবালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলামকে  প্রধান করে ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি, বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে ১২ সদস্যের ৮টি বিভাগীয় সমন্বয় কমিটি এবং জেলা প্রশাসককে প্রধান করে ১৮ সদস্যের জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। সে সময়  রোহিঙ্গা ঠেকাতে গঠন করা হয় বিশেষ কমিটি।

১৪টি উপজেলায় সংশ্লিষ্ট ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যান, কারবারি, হেডম্যান, আঞ্চলিক পরিষদের প্রতিনিধি (পার্বত্য এলাকার ক্ষেত্রে) এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে ১২ সদস্যের বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়া, ভোটার তালিকায় কোনো রোহিঙ্গা প্রবেশের ঘটনার জানা থাকলে তা বিশেষ কমিটিকে জানানোর জন্য এলাকায় প্রতিদিন মাইকিং করা হয়। সীমান্তবর্তী এসব উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণীত হয়। প্রতিবেশী দেশ থেকে রোহিঙ্গা ও বিভিন্ন ‘বিদ্রোহী’ সংগঠনের সদস্যদের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে- সন্দেহজনক এমন এলাকার তথ্য চেয়ে ওই সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহায়তাও চায় ইসি। পরে হালনাগাদের সময় ২০০৯ সালে কক্সবাজার ও পার্বত্য এলাকার প্রায় অর্ধ লাখ ভোটারের আবেদন বাতিল করা হয়। এমজমিন
২৭ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে