সোমবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৫, ০১:৪৩:৩৭

অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছেন মির্জা ফখরুল

অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছেন মির্জা ফখরুল

রেজাউর রহমান সোহাগ : অবশেষে ভারমুক্ত হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিশ্বস্তসূত্রে জানা গেছে, মির্জা ফখরুলকে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে। বিএনপির আগামী কাউন্সিলেই তাকে পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হবে। তবে যদি কোন কারণে বিএনপির কাউন্সিল আয়োজনে বিলম্ব হয়, তবে সেইক্ষেত্রে কাউন্সিলের আগেই নির্বাহী সিদ্ধান্তের মাধ্যমেও এই বিষয়টি কার্যকর করা হতে পারে বলে সূত্রে জানা যায়।

উল্লেখ্য, বিএনপির প্রাক্তন মহাসচিব খন্দকার দেলোয়ার হোসেনের ইন্তেকালের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব করা হয়। দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালনরত ফখরুলকে ভারমুক্ত না করায় বিষয়টি তার দলের ভিতরে ও বাইরে সর্বত্রই আলোচিত ও সমালোচিত হচ্ছে।

সূত্রমতে জানা গেছে, মির্জা ফখরুলকে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করার ব্যাপারে দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের কারণে কিছুটা মতভেদ থাকলেও দলে মির্জা ফখরুলকে মহাসচিব করার পক্ষের পাল্লাই বেশী ভারী।এছাড়াও বিএনপির মাঠ পর্যায়ের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও বিএনপির সমর্থকদের কাছে ক্লিন ইমেজের একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মির্জা ফখরুলের রয়েছে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা। পাশাপাশি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও সভা-সেমিনারে মির্জা ফখরুলের দেয়া রাজনৈতিক বক্তব্যগুলোকেও খুবই ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করছেন দেশের সচেতন জনগণ। এই বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে মির্জা ফখরুলকেই দলের পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিএনপির হাই কমান্ড।

বিএনপি সূত্রে আরও জানা গেছে, বিএনপির অপর সিনিয়র নেতা তরিকুল ইসলামকে দলের মহাসচিব করার জন্য বিএনপির ঢাকা মহানগর কমিটির একজন নেতার নেতৃত্বে বিএনপি নেতাদের একটি অংশ বেশ সক্রিয় তৎপরতা চালিয়েছিলেন। যে কারণে তরিকুল ইসলাম বিএনপির মহাসচিব হতে পারেন এমন একটি আলোচনা শুনা গেলেও এই বিষয়টি এখন আর তেমন আলোচনায় নেই।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের দীর্ঘদিন যাবত বিএনপির মহাসচিব পদে ভারপ্রাপ্ত থাকা এবং আগামীতে তার সম্ভাব্য ভারমুক্ত হওয়ার বিষয়ে দেশের বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আতাউর রহমানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি মনে করি বিএনপি যদি আবারো সাংগঠনিকভাবে সুসংগঠিত হতে চায় তাহলে অবশ্যই তাদের দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুলকে ভারমুক্ত করা প্রয়োজন এবং এটা আরো অনেক আগেই করা উচিত ছিল। বিএনপির রাজনীতিতে মির্জা ফখরুলেরতো অনেক ত্যাগ ও ডেডিকেশন রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছেও তার গ্রহণযোগ্যতা ব্যাপক।বিএনপির বর্তমানে প্রধান সমস্যা হচ্ছে নেতৃত্বের সংকট ও সাংগঠনিক অব্যবস্থাপনা।

যে কারণে তৃণমূলে ও জনগণের মাঝে অনেক সমর্থন থাকার পরেও বিএনপি সেভাবে এগিয়ে যেতে ও সুসংগঠিত হতে পারছে না। বিএনপিকে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে দলে অনেক ক্ষেত্রেই সংস্কার আনতে হবে এবং এই সংস্কার আনাটা তাদের দলের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এই সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যদি মির্জা ফখরুলকে ভারমুক্ত করে দলের পূর্ণাঙ্গ মহাসচিব করা হয় তাহলে শুধু বিএনপির জন্য নয়, গণতন্ত্রের জন্যও এটা খুবই ভালো এবং উপযোগী সিদ্ধান্ত হবে। তবে তাকে শুধু মহাসচিব করলেই হবে না, অবশ্যই তাকে পূর্ণাঙ্গ ক্ষমতাও দিতে হবে।

মহাসচিবকে ক্ষমতা প্রয়োগের এখতিয়ার না দিলে এর কোন সুফলই বিএনপি পাবে না। আমি মনে করি, দেশের অধিকাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্বকারী দুই শীর্ষ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মতো জনপ্রিয় দলে মহাসচিবের দায়িত্বে যারাই বহাল থাকবেন তাদেরকে অবশ্যই প্রাপ্য সম্মান ও পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দিয়েই রাখা উচিত। এত বড় রাজনৈতিক দলের একজন মহাসচিবকে বছরের পর বছর ভারপ্রাপ্ত রাখাটা রাজনীতি ও গণতন্ত্রের জন্য মোটেও শোভনীয় নয়।-ইনকিলাব
১২ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এস.এ.সুমন/একে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে