সালমান তারেক শাকিল: আনুষ্ঠানিক কোনও আহ্বান ছাড়াই দলের পাঁচ নেতা ও এক জন অর্থনীতিবিদকে নিয়ে জরুরি বৈঠক করলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে বৈঠকটি শেষ হয় রাত ১২টার দিকে। বৈঠকের বিষয়ে অফিসিয়াল কোনও ঘোষণা দেয়নি বিএনপি। এ বিষয়ে অংশগ্রহণকারী নেতারা বললেন, বৈঠকের আলোচনা ও বিষয়বস্তু চেয়ারপারসনের পক্ষ থেকে ‘হাইলি-রেস্ট্রিকটেড’ আছে। মুখ খোলা যাবে না।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও বিএনপিপন্থী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
রাত সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া এ বৈঠকের বিষয়ে আগে থেকে কোনও ঘোষণা দেওয়া হয়নি। খালেদা জিয়ার আহ্বানে দ্রুত এ বৈঠকে ডাকা হয় ছয় জনকে। এক্ষেত্রে বিএনপির মিডিয়া উইং কোনও তথ্যই দিতে পারেনি। উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান রাত সোয়া ১২টার পর বলেন, ‘বৈঠকের বিষয়ে আমি অফিসিয়ালি নোটিশড হইনি। এ কারণে আমি কিছুই বলতে পারব না।’
বৈঠকে অংশগ্রহণকারী স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ‘কোনও কথাই বলব না। ম্যাডামের ‘হাইলি-রেস্ট্রিকশন’ রয়েছে।’ প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টার বেশি সময়ের বৈঠকের বিষয়ে কোনও ইঙ্গিতও দিতে রাজি হননি বিএনপির নেতারা। তবে মঙ্গলবার রাতে গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অবস্থান করা কয়েকজন নেতাকর্মী ও কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।
তারা বলছেন, ‘আগামী ১৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলোচনা করতে রাষ্ট্রপতি বিএনপিকে ডেকেছেন। এক্ষেত্রে গুলশানে অবস্থানকারী নেতাকর্মীদের ধারণা, বৈঠকে রাষ্ট্রপতিকে কী প্রস্তাব দেওয়া হবে, প্রস্তাবে কাদের নাম যুক্ত করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে সরকারের করণীয় কী হতে পারে, এসব বিষয় নিয়ে বিএনপির প্রস্তাবগুলো আজ রাতে আলোচনা হয়েছে।’
দায়িত্বশীল এক নেতা দাবি করেন, বৈঠকের মূল ফোকাস পয়েন্ট দু’টি। একটি হচ্ছে, বিএনপি যাদের নাম প্রস্তাব করবে, তাদের তালিকা ও তাদের সঙ্গে কথা বলতে ড. মাহবুব উল্লাহকে দায়িত্ব দেওয়া। দ্বিতীয়ত, আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ ইতিবাচক হলে বিএনপিও ইতিবাচক সাড়া দেবে। তবে আওয়ামী লীগের অবস্থানের পুনরাবৃত্তি ঘটলে বিএনপির অবস্থান কঠোর হতে পারে।
মূলত এই দু’টি বিষয়েই শীর্ষ পাঁচ নেতাকে ডেকে আলোচনা করেছেন খালেদা জিয়া। এক্ষেত্রে ড. মাহবুব উল্লাহকে বিশেষ কোনও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কার কার নাম বৈঠকে তোলা হয়েছে, কার কার নাম প্রস্তাবিত হবে, এ নিয়ে কোনও তথ্য জানা যায়নি।
বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়েও কথা বলতে রাজি হননি বৈঠকে অংশনেওয়া স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রাত বারোটার কিছু সময় পর ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘না, কোনও কথাই বলতে পারব না।’ একই কথা বলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদও। তিনি বলেন, ‘নেত্রীর নিষেধ আছে, স্যরি।’-বাংলাট্রিবিউন
১৪ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সবুজ/এসএ