নিউজ ডেস্ক : ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসনের চতুর্থ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী অমিত সাহা হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘তিন অক্ষরের ‘বন্ধু’ শব্দটির অর্থ শত্রু নয় এবং যার ওপর বিশ্বাস রাখা যায়। ‘বন্ধুত্ব’ হচ্ছে মমত্ব, আনুগত্য, ভালোবাসা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও গভীর বিশ্বাসের মিশ্রণ’।
বৃহস্পতিবার অমিত সাহা হত্যা মামলার রায়ে বিচারক আসামি আসফাক আহম্মেদ শিহাব ও আল-আমিন ইসলামকে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাপেক্ষে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। অপর আসামি রুহুল আমিন রুবেলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
বন্ধুদের হাতে অমিত সাহাকে নৃশংসভাবে হত্যা ‘বন্ধুত্ব’ শব্দটিকে কলঙ্কিত করেছে। বন্ধুর মাঝে থাকবে না কোনো লোভ-লালসা, থাকবে মমত্ব, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। সেই চরিত্রের বন্ধুত্ব করে নিজে নিরাপদ থাকা যায়। পরিবার নিশ্চিত হতে পারে বাড়ির ছেলে বা মেয়েটির বা অন্যদের বন্ধু সঙ্গ নিয়ে। আসামিরা বন্ধুত্বের পরিচয়ে যে নৃশংস ঘটনার অবতারণা করেছে তার পুনরাবৃত্তি না হোক আদালত তা কামনা করেন।
পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন,‘বন্ধুত্বের মধ্যে লোভ-লালসা থাকবে কেন। কি অপরাধ ছিল অমিত সাহা ও তার পরিবারের। বন্ধু নির্বাচনই কি তার অপরাধ ছিল? নাকি অমিত সাহার পরিবারের ভুল ছিল বন্ধু নামের শত্রুদের সঙ্গে অমিত সাহাকে মিশতে দেয়া’।
রায় ঘোষণার পর অমিত সাহার বাবা শ্যামল চন্দ্র বলেন, রায়ে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাফায়েত হোসেন সজীব বলেন, আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২১ নভেম্বর আসামিরা অমিত সাহার পল্লবীর ভাড়া বাসা থেকে ৮ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। অমিত সাহা দেখে ফেললে জুসের মধ্যে অচেতন ওষুধ দিয়ে তা খাইয়ে গলা টিপে তাকে হত্যা করে আসামিরা। পরে লাশ সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর অমিতের বাবা শ্যামল চন্দ্র পল্লবী থানায় একটি মামলা করেন।
২০১৩ সালের ২৯ এপ্রিল মামলা তদন্ত কর্মকর্তা তিন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতে তিন আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় ৩২ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময় ২১ সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
১৫ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস