শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১০:০৬:৩৪

একজন হেনা বেগম, নিঃসঙ্গতাই যার সঙ্গী

একজন হেনা বেগম, নিঃসঙ্গতাই যার সঙ্গী

মাহতাব হোসেন : নিঃসঙ্গ নারী হেনা বেগম।   বয়স নব্বই ছাড়িয়েছ। দু'পাটির দাঁত পড়ে গেছে। কথা তাই অনেকটাই স্পষ্ট হয় না। চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলতে হয়।   এই পুরো পৃথিবীতে তাঁর কেউ নেই। স্বামী মারা গেছেন এখন থেকে আনুমানিক ২০ বছর আগে। এমনটাই জানালেন নেত্রকোণা থেকে ঢাকায় শেষ বয়সে এসে বেঁচে থাকার আপ্রাণ চেষ্টার করছেন হেনা বেগম।

বিয়ের পর কোনো সন্তান হয় নি। তাই একাই বলতে গেলে। পুরো বংশের মধ্যে শুধু এক ভাই আছে। সেই ভাইয়েরও খোঁজ খবর নেই।   নেত্রকোনায় কোনো আত্মীয় স্বজন নেই।   মানুষের বাসায় কাজ করতেন। কিন্তু বয়স তাঁর কাছ থেকে কাজ কেড়ে নিয়েছে।   বয়স প্রতারণা করেছে হেনা বেগমের সাথে।  

নব্বই বছরের হেনার অজস্র দুঃখ স্মৃতি রয়েছে। কিন্তু শেষ বয়সে এসে তাঁর এমন অবস্থা হবে কে জানতো। কেউ তাঁকে কাজ দেয় না। নেত্রকোণায় বিভিন্ন দ্বারে দ্বারে কত ঘুরেছেন না কেউ কাজ দিতে রাজি না। আর দেবেনই বা কেন? তাঁর যে বয়স সেই বয়সে কোনো কাজ করার ক্ষমতা থাকে? তারপরেও হাল ছাড়েন নি। চলে এসেছেন ঢাকায়।   ঢাকায় নাকি অনেক কাজ। অন্তত মানুষের বাসায় তো একটা কাজ জুটে যাবে।

হেনা বলেন, 'আমি অবশ্যই কাজ করতে পারমু বাজান। আমি কাজ করতে ঢাকায় আইছি। মাইনষের বাড়ি বাড়ি গিয়া কাজ খুঁজি কিন্তু এইখানকার মানুষেরা কয়টা টেকা দিয়া পাঠাইয়া দেয়। কেউ কাজে নেয় না। তাই এখন আমি কি করমু? নিজেই মানুষের কাছে হাত পাতি।   শরম লাগে, তারপরেও  হাত পাততে হয়। '

হেনা বলেন, 'হাত পাততে যখন খারাপ লাগে তখন খাড়াইয়া থাকি। তখন যদি কারো মনে দয়া হয়, তাইলে কিছু দান করে। এখন  মাইনষের দয়া নিয়াই বাঁইচা থাকতে হয়। '

বৃদ্ধা হেনা ঢাকায় বাঁচার তাগিদে ছুটে এসেছেন। কাজ না পেয়ে এখন পথে নেমেছেন। থাকেন রাজধানীর ভাটারা এলাকার ছোলমাইদ এলাকায়। জানালেন এলাকার দুই নারীর সাথে থাকেন। থাকার জন্য তাকে এক হাজার টাকা দিতে হয়। এই টাকা জোগাড়, আবার খাওয়ার টাকা জোগাড়ের জন্যই পথে নেমেছেন। -কালের কন্ঠ।
১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে