নিউজ ডেস্ক : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট। একই সঙ্গে তিনি বিরোধী দলগুলোর জন্য আরো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদের পেছনে স্থানীয়ভাবে বেড়ে ওঠা সন্ত্রাসীরা দায়ী উল্লেখ করে বার্নিকাট এও বলেছেন যে, এটা বাইরের প্রভাবমুক্ত নয়।
বুধবার কলতাকায় শুরু হওয়া দু’দিনের ‘ইন্দো-এশিয়া কানেক্টিভিটি ফর শেয়ার্ড প্রোসপারিটি’- শীর্ষক কনফারেন্সের প্রাক্কালে টেলিগ্রাফের সঙ্গে আলাপচারিতায় এসব কথা বলেন বার্নিকাট। বাংলাদেশ সরকারকে নিয়ে বার্নিকাট বলেন, সরকার নতুন একটি সন্ত্রাস বিরোধী ইউনিট গঠনের মাধ্যমে আইএস’র হুমকি মোকাবিলা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় জিরো টলারেন্স নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সকল নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা এবং বিভিন্ন ইউনিটের কাছে তিনি এটা স্পষ্ট করেছেন যে, তাদেরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে হবে, যেন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাদের লড়াই করার ক্ষমতা আরো অনেক বেশি কার্যকর হয়।
বাংলাদেশে বিরোধী দলগুলোর প্রসঙ্গে বার্নিকাট বলেন, আমরা একটি গণতন্ত্রের দেশ হিসেবে আহ্বান জানাই যে, সক্রিয় বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র হতে পারে না। এবং বাংলাদেশের সকল বিরোধী দল এবং সুশীল সমাজকে আরো বেশি গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেয়ার আহ্বান জানাই আমরা। কোনো শক্তিরই দেশকে বিভক্ত করতে পারা উচিত নয়। কিন্তু আমরা সরকার হিসেবে, রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে যদি বিভক্তির এক অনুভূতি সৃষ্টি করি, যেখানে সন্ত্রাসবাদের শক্তিগুলো আমাদের সুযোগ নিতে পারে- তাহলে সেটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।
কলকাতায় আয়োজিত ওই কনফারেন্সে একটি প্যানেল আলোচনায় বার্নিকাট যোগ দেন ভারত ও নেপালে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ভার্মা এবং আলাইনা তেপলিটজ এর সঙ্গে। এর ফাঁকে তিনি ভারতীয় অনলাইন লাইভমিন্টকে আরেকটি সাক্ষাৎকার দেন।
ওই সাক্ষাৎকারে বার্নিকাট বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি হয়তো দেশে চরমপন্থি উগ্রপন্থা বিস্তারের কারণ নয়। কিন্তু এটি একটি ‘প্রভাবক’। রাষ্ট্রদূত বলেন, চরমপন্থার মতো রাজনৈতিক সহিংসতাও সমানভাবে উদ্বেগজনক। কারণ, রাজনীতিকদের এসব অস্ত্রধারী সহজেই আইএস ও আল কায়দার মতো বেআইনি চরমপন্থি গোষ্ঠীর প্রতি আনুগত্য দেখাতে পারে।
তিনি আরও বলেছেন, এসব গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার রাষ্ট্র ঘোষণা করেছে। আর বাংলাদেশের ঝুঁকি আরও বেশি, কারণ এ দেশে আইএস ও আল কায়দা একসঙ্গে কাজ করছে বলে জানা যায়। যেমনটি দুনিয়ার আর কোথাও ঘটছে না। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি তরুণ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে। অনেকে এখনও চরমপন্থায় দীক্ষিত হচ্ছে ও চরমপন্থি কর্মকাণ্ডের জন্য রিক্রুট হচ্ছে, এটি তারই আলামত। তিনি একপর্যায়ে মন্তব্য করেন, ‘বাংলাদেশের মতো এতটা রাজনীতিকৃত কোনো রাষ্ট্র আমি দেখেনি।’ এমজমিন
১৬ ডিসেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস